শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৫২:২৫

‘নিহত অধ্যাপকও পেয়েছিলেন উড়ো চিঠি'

‘নিহত অধ্যাপকও পেয়েছিলেন উড়ো চিঠি'

নিউজ ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের যে অধ্যাপককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে তার একজন সহকর্মী বলছেন, নিহত অধ্যাপক এ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী নিরীহ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, মি: সিদ্দিকী কোনোরকম শিক্ষক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

তিনি বলেন, সেই অর্থে কোনো গ্রুপে তিনি বিলং করতেন না- তিনি বেশি একা একা থাকতেই পছন্দ করতেন।  ক্লাসরুম, পড়াশোনা এগুলো নিয়েই বেশি থাকতেন এবং তিনি একটি সাংস্কৃতিক জোটের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

মিঃ শহীদুল্লাহ জানান, তিনি প্রথমদিকে ইংরেজি বিভাগের খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডগুলো আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন।  পরে আরকজন জুনিয়ার শিক্ষক সেই দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি নিজেই একটি সাংস্কৃতিক জোট গড়ে তোলেন।

তার কথায়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ''তাঁর ঘরেই ছোট পরিসরে গানবাজনার চর্চ্চা করতেন- বর্ষবরণ জাতীয় অনুষ্ঠানের রির্হাসাল দিতেন''।  বিভাগের ছাত্রছাত্রী এবং ওনার কিছু বন্ধুবান্ধব নিয়েই তিনি এই জোট গড়ে তুলেছিলেন বলে জানান অধ্যাপক শহীদুল্লাহ।

সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, মিঃ সিদ্দিকী তার গ্রামের বাড়ি বাগমারায় একটি গানবাজনার স্কুল করেছিলেন।  এর বাইরে তার সেভাবে কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ বা ফ্রন্ট লাইনে আসা সেরকম কিছু দেখিনি কখনো।

তিনি বলেন, জানা মতে কখনো কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মত প্রকাশ করতে তাকে দেখিনি। মিঃ সিদ্দিকী প্রগতিশীল মানুষ ছিলেন, তার ধর্মীয় গোঁড়ামি ছিল না, তবে ধর্মের বিরুদ্ধে তাকে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে তারা শোনেননি।

অধ্যাপক শহীদুল্লাহ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সহকর্মী তাকে আজই জানিয়েছেন যে কয়েকদিন আগে কয়েকজন শিক্ষকের কাছে উড়ো চিঠি পাঠানো হয়েছিল এই বলে যে, 'বিভাগের কোনো কোনো শিক্ষক ক্লাসে নাস্তিকের মত কথাবার্তা বলেন, তবে চিঠিতে কোনো শিক্ষকের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

মি. শহীদুল্লাহর ওই সহকর্মীও এরকম একটি চিঠি পেয়েছেন।   তাকে কখনো নাস্তিকের মত কথা বলতে আমরা কখনও শুনিনি।

অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, তিনি ১৯৭৫ সালে ছাত্রজীবন থেকেই মি. সিদ্দিকীকে চেনেন।  তারা একসঙ্গে পড়ালেখা করেছেন, আবার ১৯৮৩ সালে একইসঙ্গে তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজে যোগ দেন।

এ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাড়ির কাছেই আজ হত্যা করা হয়।  রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ সামসুদ্দিন জানিয়েছেন, বোয়ালিয়া থানার শালবাগান এলাকার বাড়ি থেকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছিলেন তিনি।  সূত্র : বিবিসি
৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে