নিউজ ডেস্ক: তৃতীয় দফার ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় ফরিদপরে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাই, পাবনায় বিএনপি কর্মী ও ভৈরবে সহিংসতায় আহত এক বৃদ্ধসহ তিন জন নিহত হয়েছেন। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বাঘাট ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমানের বড় ভাই আতিয়ার রহমান (৫৫)কে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের বাগাট বাজারে শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রাতে আতিয়ার রহমান বাগাট বাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্পে কয়েকজন কর্মী-সমর্থকের সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২০/২৫ জন লোক লাঠিসোটা ও রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে।’
এ সময় ৫/৬জন আহত হয়। আহতদের মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আতিয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফরিদপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ মে চতুর্থ ধাপে বাগাট ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, পাবনায় আ’লীগ-বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্রিমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় ১ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম ইমদাদুল হোসেন (৩২)। তিনি ওই এলাকার মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সালাউদ্দিন জানিয়েছেন তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ওই কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা দেরি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আজিজুল ইসলাম ও বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় তারা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গাড়ীতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিজিবি, পুলিশ ও ব্যাটেলিয়ান আনসার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পৃথক পৃথক ভাবে ১৪ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।
অপর দিকে বিজিবির সহকারী পরিচালক হোসেন আলী ওই কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ফাঁকা গুলি চালানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ সময় বিজিবির এক সদস্য আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন।
এ ব্যাপারে পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবির জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এমদাদুল হোসেন মারা গেছেন। তিনি বলেন, বিজিবি ৯ রাউন্ড, পুলিশ ২ রাউন্ড ও ব্যাটেলিয়ান আনসার ৩ রাউন্ড বর্ষণ করেছে। তবে কোন বাহিনীর ছোড়া গুলিতে তিনি মারা গেছেন. সে বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতেই তিনি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার।
এদিকে, ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত মো. ছিদ্দুকুর রহমান ছিদ্দু মিয়া (৬০) মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুরে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ছিদ্দু মিয়া শ্রীনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী সেলিমের সমর্থক। গতকাল শুক্রবার সকালে প্রতিপক্ষ বাদশার সমর্থকদের হাতে গুরুতর আহত হয়ে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে ছিদ্দু মিয়ার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তেজিত লোকজন প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ।
২৪ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/ইব/পিন্স