নিউজ ডেস্ক : দেশে ক্রমবর্ধমান হারে খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় নিজেরে জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সেই সাথে বিচারহীনতার কারণেই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধনে তারা একথা বলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সিদ্দিককে হত্যার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার যদি আগে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনত, তা হলে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকত না।’ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান এই শিক্ষক।
তিনি বলেন, আমরা সনাতন পদ্ধতিতে এ বিচার চাই না। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান করব অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল বলেন, দেশে বর্তমানে যেন হত্যার মহড়া চলছে। আমরা যারা এসব হত্যার প্রতিবাদ এবং অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলছি তারাও জানি না যে কিছুক্ষণ পর আমরা জীবিত থাকতে পারব কি না। দেশে কি পাকিস্তানি ধ্যান-ধারণা অব্যাহত থাকবে? অধ্যাপক রেজাউল করিমের পর কে?
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক হত্যার রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়েছে। আমি বলব, এসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন না হওয়ার পেছনে যদি পুলিশ প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, প্রাণীহত্যা পাপ, নরহত্যা মহাপাপ। আমাদের দেশে একের পর এক হত্যা হচ্ছে। কিন্তু অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে পারছে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধর্মের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা উচিত নয়। তার পাশাপাশি এ কথাও বলা উচিত ছিল, কেউ যদি ধর্মের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয় তাকে হত্যা করার দায়িত্ব আরেকজনের নয়। সেটাও আইনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আমরা যদি আজকে জঙ্গি আইনে চলে যাই, আমার যার বিরুদ্ধে অসন্তোষ তার মাথা উড়িয়ে দেয়া হবে, এ পদ্ধতি কোনো সভ্য পদ্ধতি নয়। এ পদ্ধতি কোনো ধর্মীয় পদ্ধতিও না। এ পদ্ধতি নরপশুদের পদ্ধতি।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া, নীল দলের আহ্বায়ক নাজমা শাহীন, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক প্রমুখ।
২৫ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস