মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:১৪:০৩

ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া

ক্ষুব্ধ খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া

নিউজ ডেস্ক : গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কার্যালয়ভিত্তিক কয়েকজন দলীয় নেতার কর্মকাণ্ডে খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ করে দলের নতুন নির্বাহী কমিটি গঠনে ‘পদ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের কারণে চরম অসন্তুষ্ট তারেক রহমান। কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হাতে গোনা তিন-চারজন নেতার প্রতি তিনি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট বলে লন্ডনের একটি সূত্র গতকাল জানিয়েছে।

অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে (ইউপি) ‘মনোনয়ন বাণিজ্যে’র সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গতকাল ইউপি নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার ক্ষমতা কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে বলে চেয়ারপারসন কার্যালয়ের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাহী কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে শুরু করে স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও রয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন পদবঞ্চিত সিনিয়র নেতারাও।

দলের নীতি-নির্ধারকদের আশঙ্কা— যে কোনো সময় গুলশান কার্যালয়ে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই গুলশান কার্যালয়ে এই ক্ষোভের কিছুটা বহির্প্রকাশও ঘটে গেছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, ২৩ এপ্রিল স্থায়ী কমিটির এক প্রবীণ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গুলশান কার্যালয়ে ঘোষিত আংশিক নির্বাহী কমিটির ব্যাপারে প্রকাশ্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কুমিল্লা বিভাগের নবনিযুক্ত এক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম উল্লেখ করে তিনি এসব লোককে কারা কীভাবে নির্বাহী কমিটিতে মনোনয়ন দিয়েছেন তা জানতে চান।

বিগত (দেবিদ্বার) উপজেলা নির্বাচনে এই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার একদিন আগে দলের দুটি বিভাগে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দুজন নারী নেত্রীকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় চেয়ারপারসনের সামনে গিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা ও সাবেক এমপি রেহেনা আক্তার রানু। বেগম জিয়া তাত্ক্ষণিকভাবে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেও সফল হননি।

পরে রানুকে আগামী নির্বাচনে ফেনীতে তার নিজের আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও খুশি হননি রানু। এদিকে গত ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিল হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি ঘোষণা না করায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে। তাদের মতে, আর বিলম্ব না করে যত তাড়াতাড়ি স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করা হবে ততই মঙ্গল।

শাহজাহান এখনো বহাল : দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গত রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহানকে নির্বাচন মনিটরিং ও পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। কিছু কিছু গণমাধ্যমে এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান ইউপি ও পৌর নির্বাচন মনিটরিং ও পরিচালনার দায়িত্বে এখনো বহাল আছেন। তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সংবাদ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক।

তবে আগামী ৯টি পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যয়ন করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী দলের মহাসচিবের নমুনা স্বাক্ষরটি ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় দলের ইউপি নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ প্রচারিত হয়। -সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

২৬ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে