নিউজ ডেস্ক : রংপুর যাবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সরকারি কাজ। ভাবলেন কোথাও থামা যাক। যেহেতু ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম/ রিম নিবন্ধনের সময় বেঁধে দিয়েছেন, মানুষ কেমন সাড়া দিচ্ছে নিজ চোখে দেখা যাবে।
যেই ভাবা, সেই কাজ। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কিছুক্ষণ যাত্রাবিরতি করলেন। দেখলেন, লাইন ধরে মানুষের সিম/ রিম রেজিস্ট্রেশনের দৃশ্য। আর তা দেখে আপ্লুত প্রতিমন্ত্রী তারানা। বললেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ দিন দিন আরও সচেতন ও দায়িত্ববান হয়ে উঠছেন’।
এমনিতেই প্রায় সময় মন্ত্রণালয়ের যেকোনো সিদ্ধান্ত বা কাজেকর্মে যেকোনো ভ্রমণের ছবিসহ সংবাদ জানান তারানা। মঙ্গলবারও (২৬ এপ্রিল) গোবিন্দগঞ্জের অভিজ্ঞতা লিখলেন তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে।
তারানা লেখেন, ‘সরকারি কাজে রংপুর যাবার পথে আমি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ কিছুক্ষণ যাত্রাবিরতি করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সেখানে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশনের অবস্থা দেখার চেষ্টা করি। আমি দেখে খুবই খুশি হই যে, এখানকার জনগণও উৎসব মুখর পরিবেশে লাইন ধরে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করছেন।’
নিবন্ধনের জন্য রিটেইলাররা ২০ টাকা করে নেয় কি না, তা কৌশলে জানতে চেয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু কেউ তার কাছে স্বীকার করেনি। তিনি লেখেন, ‘আমাদের দেশের সহজ সরল মানুষগুলো নালিশ করে না। আমি চাইছিলাম ওরা সত্যটা বলুক।’
তারানা এ-ও বলেছিলেন, ‘আমার কাছে খবর আছে ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু কেউ স্বীকার করল না।’
তারানা আরও লেখেন, ‘আমি সেখানে উপস্থিত সকলের সাথেই মত বিনিময় করি, তারা সকলেই এই পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করতে পেরে খুশি হয়েছেন এবং তারা তাদের পরিচিত অন্যান্য যারা এখনো সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করেন নাই এখনো তাদেরকেও এই পদ্ধতিতে সিম/রিম নিবন্ধন করার জন্য আগ্রহী করে তুলবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন।
‘বাংলাদেশের মানুষ আর অসচেতন নেই, সারা বাংলাদেশেই এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন করছেন’, বলেন তারানা হালিম।
তবে অনেকেই আঙুলের ছাপে সিম নিবন্ধনের বিরোধিতা করছেন। অনেকে ঘোষণা দিয়েছেন তারা নিবন্ধন করবেন না। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেন, সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া সরকার অর্থাৎ বিটিআরসি করলে তাদের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু অপারেটরদের হাতে ব্যক্তিগত তথ্য তারা তুলে দেবেন না।
আঙুলের ছাপে সিম/ রিম নিবন্ধন বন্ধে আদালতে রিট মামলা করেছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। কিন্তু আদালত এ আবেদনটি খারিজ করে দেন। তবে তিনি বলেছেন, হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল মামলা দায়ের করবেন এবং নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তার সিম নিবন্ধন করবেন না।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া কিছুদিন আগে ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘আদালতে বিটিআরসি এবং অপারেটররা যেসমস্ত কাগজাদি দাখিল করেছে তাতে এটি পরিষ্কার যে গ্রাহকের তথ্য তাদের সার্ভারে থাকবে। তাদের আইনজীবী সেটি আদালতে স্বীকারও করেছেন। কিন্তু তারপরও অপারেটরদের পক্ষে থেকে মেসেজ পাঠিয়ে দাবি করা হচ্ছে যে এই তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। আমরা আপিলে এসব বিষয় পরিষ্কার করার চেষ্টা করব।’
এ আইনজীবী প্রশ্ন রাখেন, ‘৩০ এপ্রিলের মধ্যে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন করতে বাধ্য করার মতো কোনো আইন নেই। তা ছাড়া, এই সময়ের মধ্যে সিম নিবন্ধন না করলে দেশে এমন কোন পরিবর্তন ঘটবে না। যদি আমাদের নিরাপত্তার জন্যেই সবকিছু করা হবে, তবে এত তাড়াহুড়া কেন? এত ঝাপসা প্রক্রিয়া কেন? এত হুমকি-ধমকি কেন?’ তথ্য চাওয়ার আগে ‘তথ্য সুরক্ষা আইন’ করার দাবি জানান এ আইনজীবী।-বাংলামেইল
২৭ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন