ঢাকা : জ্বালানি তেলের দাম কমলেও রাজধানীর গণপরিবহনের ভাড়া কমেনি। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে ভাড়া বাড়াতে একদিনও সময় নেন না বাসমালিকরা। বরং নির্ধারিত বাড়ার চেয়ে আরো বেশি ভাড়া আদায় করে থাকেন বাসের কন্ডাক্টররা। এ নিয়ে যাত্রীদের সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম কমলে ভাড়া কমানোর খবর রাখেন না মালিকরা।
এবার তেলের দাম কমলে দূরপল্লার ভাড়া কমানো হচ্ছে নামেমাত্র। প্রতি কিলোমিটারে মাত্র ৩ পয়সা করে। আগে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ছিল ১ টাকা ৪৫ পয়সা। বর্তমানে তা ১ টাকা ৪২ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম কমার পর দূরপাল্লার ভাড়া পুনঃনির্ধারণে নির্দেশনা দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এ বিষয়ে বৈঠকে বসবে ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি। এরপর চূড়ান্ত করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
গত ২৫ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলে দূরপাল্লা রুটে ভাড়া কমানোর নির্দেশনা দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তবে ডিজেলের দাম মাত্র ৩ টাকা কমানোয় ভাড়ায় খুব একটা প্রভাব পড়ছে না। দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে তিন পয়সা হারে ভাড়া কমতে পারে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়া আর কমে দুর্ভোগ কমছে না নগরবাসীর। আগেও যা ছিল বর্তমানেও তাই। যাত্রী কল্যাণ সমিতির দাবি, ধনীদের ব্যক্তিগত পরিবহনে ব্যবহৃত পেট্রল-অকটেনের মূল্য লিটারে ১০ টাকা কমালেও গণপরিবহনে ব্যবহৃত জ্বালানি ডিজেলের মূল্য মাত্র ৩ টাকা কমিয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের গণপরিবহনে ভাড়া কমানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, জ্বালারি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে গণপরিবহনগুলো যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে বর্ধিত ভাড়া আদায় করে থাকে। জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলেও দেশের কোনো গণপরিবহনে ভাড়া ১ পয়সাও কমানো হয়নি।
এদিকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহন ভাড়া কমানোর বিষয়ে ভাড়া নির্ধারণ কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান ব্যাপারে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক। ব্যয় বিশ্লেষণ করে একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
যাত্রীদের অভিযোগ, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আগেই বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ নিয়ে বাসের কন্ডাক্টরদের সাথে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি হয়। সম্মানের খাতিরে বেশি টাকা ভাড়া দিয়েই যেতে হয়। কিন্তু তেলের দাম কমানো হলেও আগের ভাড়া দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাসের কন্ডাক্টরদের কম ভাড়া দিতে চাইলে বারোটা বাজিয়ে ফেলে। মান-সম্মানের ভয়ে তর্কে যেতে চাই না।
২৭ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম