শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০১:০২:১৯

‘টেলিফোনে বলা হয় প্রস্তুত থাকুন’

‘টেলিফোনে বলা হয় প্রস্তুত থাকুন’

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে (প্রকাশের অযোগ্য) অধিকার নিয়ে সোচ্চার রূপবান পত্রিকার সম্পাদক জুলহাজ মান্নানসহ দুজনকে খুন করা হল ঘরে ঢুকে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করীম সিদ্দিকী খুন হন বাড়ির কাছেই রাস্তায়।

দুটি হত্যার পরই জঙ্গি সংগঠনের পক্ষ থেকে হত্যার দায়িত্ব স্বীকার করা হয়েছে। ধর্মীয় সমালোচনা করে লেখালেখির জন্য ধারাবাহিক ব্লগার হত্যার পাশাপাশি সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত এবং প্রশিক্ষিত জঙ্গিবাদী হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত চার জন অধ্যাপক খুন হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেকে হত্যার হুমকি পেয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেয়া অধ্যাপক এবং কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেন, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তিনিও নানাভাবে হুমকি পেয়েছেন এবং এখনো পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘টেলিফোনে মাঝে মাঝে বলা হয় প্রস্তুত থাকুন আর বেশি দেরি নেই।’

এখনকার অবস্থাকে অসহনীয় হিসেবে উল্লেখ করে হক বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা কার কাছে যাব? রাষ্ট্রের কাছেই যাব। কারণ এটি রাষ্ট্রের কর্তব্য যেন মানুষের জীবনটা নিষ্কণ্টক হয়।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত অধ্যাপক মলয় ভৌমিক। শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রশ্নে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেন তিনি।

‘বহু আগে থেকে সবাই যানে যে এই বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আশপাশে তারা তাদের অস্তিত্বকে জানান দেবার মতো নানান ধরনের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তার কোথাও পারিবারিক ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অনেকদিন অনেকে বসবাস করছে। এক সময় দিনের পর দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো দখলে থেকেছে ছাত্র শিবিরের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র তাদের হাতে জখম হয়েছে, মারা গেছে পঙ্গু হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় দিনের পর দিন বন্ধ থেকেছে।’

মলয় ভৌমিক বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় এখানে অপরাধ করে খুব দ্রুত সরে পড়ারও সুযোগ এখানে আছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক আব্দুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হত্যা হচ্ছে সেটি নয়। চারজন শিক্ষক খুন হওয়ায় এটি সবার নজরে এসেছে। তার মতে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দুর্বৃত্তদের উৎসাহিত করছে।

সিদ্দিকী বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান আছে তাদের আরও বেশি উদ্যোগি হওয়া দরকার। তারা যেন আচম্বিতে একটা মন্তব্য না করে ঘটনাপ্রবাহকে ঘুরিয়ে না দেয়ার কিংবা ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার বা মানুষের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করার চেষ্টা না করে।’

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগ অতীতেও জঙ্গি তৎপরতার জন্য আলোচিত। রাকসুর সাবেক ভিপি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এ অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় অসন্তোষ জানান।

তিনি বলেন, ‘বহু আগে থেকে সবাই যানে যে এই বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আশপাশে তারা তাদের অস্তিত্বকে জানান দেবার মতো নানান ধরনের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তার কোথাও পারিবারিক ভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অনেকদিন অনেকে বসবাস করছে। এক সময় দিনের পর দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো দখলে থেকেছে ছাত্র শিবিরের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র তাদের হাতে জখম হয়েছে, মারা গেছে পঙ্গু হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় দিনের পর দিন বন্ধ থেকেছে।’

মলয় ভৌমিক বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় এখানে অপরাধ করে খুব দ্রুত সরে পড়ারও সুযোগ এখানে আছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডানপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক আব্দুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হত্যা হচ্ছে সেটি নয়। চারজন শিক্ষক খুন হওয়ায় এটি সবার নজরে এসেছে। তার মতে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দুর্বৃত্তদের উৎসাহিত করছে।’

সিদ্দিকী বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান আছে তাদের আরো বেশি উদ্যোগী হওয়া দরকার। তারা যেন আচম্বিতে একটা মন্তব্য না করে ঘটনাপ্রবাহকে ঘুরিয়ে না দেয়ার কিংবা ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার বা মানুষের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করার চেষ্টা না করে।’

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগ অতীতেও জঙ্গি তৎপরতার জন্য আলোচিত। রাকসুর সাবেক ভিপি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এ অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় অসন্তোষ জানান।

রাজশাহীতে নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী ছিলেন গান-বাজনার সঙ্গে যুক্ত সংস্কৃতি মনা একজন শিক্ষক। আর জুলহাজ মান্নান ছিলেন (প্রকাশের অযোগ্য) অধিকারের পক্ষে সোচ্চার। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে সমাজকে রাষ্ট্রকে প্যারালাইজড করার একটা চেষ্টা হচ্ছে। ঘরের ভেতর গিয়ে কমান্ড স্টাইলে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে এটা সামরিক বিদ্যায় প্রশিক্ষণ লোক ছাড়া এটি সংঘটিত হওয়া সম্ভব না।’ সূত্র: বিবিসি
২৯ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে