শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:৪১:৫২

দারুণ সুখবর, শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা মালয়েশিয়ার

দারুণ সুখবর, শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা মালয়েশিয়ার

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য দারুণ সুখবর। শিগগিরই বাংলাদেশের জন্য খুলছে মালয়েশিয়ার বন্ধ দ্বার। দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি জানিয়েছেন, পুনরায় বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে ‘শিগগিরই’ ঘোষণা দেবেন তারা।

এদিকে মন্ত্রলণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা গেছে, শিগগিরই বিদেশি কর্মী নেয়ার স্থগিতাদেশ তুল নিতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। সেটা যতোদূর সম্ভব আগামী মাসের মধ্যেই হতে পারে। আর জুন থেকে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো যাবে বলেও আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
 
গতকাল বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে একটি অনুষ্ঠানে বিদেশি কর্মী নেয়ার বিষয়ে শিগগিরই ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. আহমাদ জাহিদ হামিদি। তিনি বলেছেন, ‘বিদেশি শ্রমিক ইস্যুতে আমি উদ্বিগ্ন। আমাদেরই অনেক সমস্যা আছে। আবার বিদেশি শ্রমিক আমদানিকে কেন্দ্র করে সমস্যা বিভিন্ন খাতে প্রভাব ফেলছে। বিদেশি শ্রমিকদের জন্য দরজা খোলা রাখতে আমাদের দেশি নিয়োগকর্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।’
 
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও প্রস্তাবের বিষয়টি সবসময়ই উন্মুক্ত রেখেছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।’

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদি নিজেই। তিনি বলেছিলেন, ‘কত শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত থাকবে।’

যদিও সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় দেশটির মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিরা। অনেকে বলেন, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে চুক্তির পরদিন এ ঘোষণা অনাকাঙ্ক্ষিত। অবিলম্বে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান তারা।

মালয়েশিয়াভিত্তিক স্টার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাতে মালয়েশিয়া রিটেইল চেইন অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে হামিদি একথা বলেন। তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমিকদের বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত। আমি জানি যে, অনেক খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিদেশি শ্রমিকদের জন্য ‘দরজা’ খুলতে উদ্যোক্তাদের তাগিদ দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার তাদের বক্তব্য শুনছে এবং যথাসময়ে এ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।

আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সরকারে মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তবে এর পরদিনই বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিতের ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।

ওই সমঝোতা স্মারকে কতো শ্রমিক নেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলেও মৌখিকভাবে বছরে তিন লাখ করে মোট ১৫ লাখ শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয় বলে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে কেবল ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে শ্রমিক নেওয়া শুরু করে মালয়েশিয়া। এরপর গতবছর বাংলাদেশকে মালয়েশিয়ার জনশক্তির জন্য ‘সোর্স কান্ট্রির’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সেবা, উৎপাদন, নির্মাণসহ অন্যান্য খাতে কর্মী নেওয়ার আলোচনা শুরু হয়।

এর ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ত জায়েম এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

ওই চুক্তির আওতায় মালয়েশিয়া তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ বাংলাদেশি কর্মী নেবে বলে অনুষ্ঠানের পর জানানো হয়।

কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী হামিদি বাংলাদেশসহ সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে জনশক্তি আমদানি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

তিনি সে সময় বলেছিলেন, কতো শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সরকার সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেওয়া স্থগিত থাকবে।
৩০ এপ্রিল, এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে