ঢাকা : দেশে কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থা নেই। প্রতিদিন গড়ে ১৪ জন মানুষ খুন হচ্ছে। নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। গত তিন মাসে পত্রিকার হিসাবে দেড় হাজার লোক খুন হয়ে গেছে। গুপ্তহত্যা এবং অতর্কিতে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাগপার ৩৬তম জাতীয় কনভেনশনে এসব অভিযোগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসরন বেগম খালেদা জিয়।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশে এক গভীর সঙ্কটকাল চলছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার নেই। বৈধ সংসদ নেই। তথাকথিত সংসদে কোনো কার্যকর বিরোধী দল নেই। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করেছে সরকার।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে সুশাসন নেই। সুবিচার নেই। রাষ্ট্রীয় প্রথা ও প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। আইনের শাসন নেই। নেই কোনো মানুষের নিরাপত্তা। সরকার কাউকে কোথাও কোনো নিরাপত্তা দিতে পারছে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো স্বাভাবিকভাবে আইন অনুযায়ী তাদের কর্তব্য পালন করতে পারছে না। তাদের রাখা হয়েছে শুধু গণবিচ্ছিন্ন ও অবৈধ সরকারকে জনগণের ক্ষোভ থেকে রক্ষা করার জন্য।
তিনি বলেন, তারা সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। বিচারবহির্ভূতভাবে যাকে খুশি তাকে হত্যা করছে। জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম ও খুন করে ফেলছে। জুলুম, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হামলা, মামলা চলছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে বাড়িছাড়া। মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নাগরিকদেরও নির্যাতন করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়া বলেন, দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। শেয়ারবাজার থেকে লাখ কোটি টাকা লুটে নেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে ফেলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো থেকে লুটপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভের আটশ' কোটি টাকা ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এর আগে এ ধরনের ডিজিটাল কারচুপি কখনো দেখেনি। এই টাকা বাংলাদেশের জনগণের টাকা। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত বিপুল টাকা বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা ষড়যন্ত্রের মামলায় শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের ওপর আস্থা রাখুন। দেশের সংকট দেশেই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। অন্যত্থায় এক সময় বিদায় নিতে হবে সরকারকে।
৩০ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম