নিউজ ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে লুটপাট করছে। নতুন নতুন আইন করছে। আজকে তারা মানুষকে তারা মানুষ মনে করে না।
রোববার বিকেল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘নিরাপত্তার কর্মক্ষেত্র বাঁচার মত মজুরি এবং গুম-খুন, হয়রানি-নির্যাতন বন্ধের দাবিতে’ শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে দুপুর দেড়টায় কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কেমন নির্বাচন হয় তা সবাই দেখছে। ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে ফেলে। সন্ত্রাসী করে সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয় না। হাসিনাও যেরকম নির্বাচন কমিশনও সেরকম।
খালেদা জিয়া বলেন, শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করেছিল। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। মহান মে দিবসে সব শ্রমিককে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। ৎ
তিনি বলেন, শ্রমিক ভাইরা এখন অনেক নির্যাতিত। রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অনেক টাকা উঠানো হয়েছে। এ টাকা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগারদের।
খালেদা বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণার্থে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বিএনপি তৈরি করেছি। এটা যথেষ্ট নয়। সরকার কাউকে কোনো নিরাপত্তা দিয়ে পারছে না। তবুও দাবি করছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক, যা কিছু ঘটছে তা সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
তিনি বলেন, দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৪ জন খুন হচ্ছে। গুপ্তহত্যা ও অতর্কিতে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ব্লগার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখক, প্রকাশক, বিদেশি নাগরিক, দূতাবাস কর্মী এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেরাও হামলা ও হত্যার শিকার হচ্ছে।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যই পকেট ভর্তি করা। গত তিন মাসে পত্রিকার হিসাবে দেড় হাজার লোক খুন হয়েছে। দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজার থেকে লক্ষ কোটি টাকা লুটে নেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে ফেলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো থেকে লুটপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গত পাঁচ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।
খালেদা বলেন, আন্দোলন করতে হবে, আন্দোলনের মাধ্যমে এদের হটাতে হবে। আপনারা না খেয়ে থাকবেন আর তারা লুটেপুটে খাবে, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করবে এটা হতে পারে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নিজের লোক ছাড়া কারো কোনো অধিকার নেই। অধিকার আদায় করে নিতে তাই সবাইকে আন্দোলন করতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশকে তারা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। তাই তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই। এতে করে তাদের শেষ রক্ষা হবে না।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আসলাম চৌধুরী, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আবু জাফর, মহিলা দলের সভানেত্রী নূরী আরা সাফা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম প্রমুখ।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হারুন অর রশিদ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, এম এ মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানা উল্লাহ মিয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা মহানগর যুবদলের উত্তরের সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাহাঙ্গির প্রমুখ।
১ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম