স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ফেসবুক ম্যাসেজে অভিযোগ এল বৃহস্পতিবার। পরের দিন শুক্রবার রাস্তায় ব্যস্ত তিনি। তবে ব্যস্ততা কোনো আয়োজন করে ছিল না। আচমকা ছুটে যান রাস্তা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরিয়ে দিতে। দেখালেন ‘জিরো টলারেন্স’।
এর পরের দিন শনিবার ছুটলেন রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের দিকে। বিভিন্ন অনিয়ম ঠেকাতে আচমকা হানা দিলেন সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি’রই জোয়ারসাহারা ডিপোতে।
এর আগের দিন কপাল পুড়েছিল ব্যাটারি অটোরিকশা মালিকদের। আর শনিবার কপাল পুড়লো বিআরটিসির এক কমকর্তার।
সকাল ৮টার পর পৌঁছে যান বিআরটিসির জোয়ারসাহারা বাস ডিপোর অদূরে। অভিযোগ ছিল, বাস নোংরা, ফ্যান খারাপ, সিট ভাঙা, বসা যায় না- ইত্যাদি ইত্যাদি।
যাত্রীদের ফেসবুক ম্যাসেজে পাঠিয়ে দেয়া এ অভিযোগের প্রমাণ পেতে ছুটে যান। বেশি দূর পা বাড়াতে হয়নি মন্ত্রীর। সঙ্গে নিতে হয়নি পুলিশ। ডাকতে হয়নি কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে।
সাধারণ পথচারী বেশে বিমানবন্দর সড়কের পাশে রাখা সিঙ্গেল ডেকার, ডাবল ডেকার ও আর্টিকুলেটেড ৮টি বাসে একের পর এক উঠে পড়লেন মন্ত্রী।
দেখতে পান- যাত্রী নেই, কিন্তু আছে মশার ভাগাড়। এর মধ্যে তিনটি বাসে যেন মশার দীর্ঘদিনের আস্তানা।
কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পদের এমন অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকা দেখতে আর ডিপো পর্যন্ত পা বাড়াতে হয়নি মন্ত্রীর।
যাত্রীর ফেসবুক আর মোবাইল অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গেলেন রাস্তার পাশে রাখা ৮টি বাসে উঠেই।
সিট ভাঙা, নোংরা, ফ্যান নেই, কোনোটি চলে না, ছাল-বাকল উঠে যাওয়া বিআরটিসি বাস প্রত্যক্ষ করলেন মন্ত্রী।
এ অবস্থা দেখে তিনি আর দেরি করেননি। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার অভিযানের মধ্যেই জোয়ারসাহারা বাস ডিপোর ম্যানেজার নায়েব আলীকে ‘সাময়িক বরখাস্ত’ করেন মন্ত্রী।
বাসগুলোর সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা নায়েব আলীর অবহেলার কারণেই এ অবস্থা।
ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে বৃহস্পতিবার বিআরটিসি বাসে নানা অনিয়মের বেশ কিছু অভিযোগ আসে। টেলিফোনে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন। এরপর অ্যাকশনে নামেন মন্ত্রী।
এর সূত্র ধরেই শনিবার কাউকে না জানিয়ে বিআরটিসি বাস ডিপোর দিকে ছুটেন তিনি। ডিপোতে যাওয়ার আগেই রাস্তায় বাসে উঠে ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ নেন মন্ত্রী।
৭ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম