রবিবার, ০৮ মে, ২০১৬, ০৮:২১:০৩

প্রস্তাবিত আইনে রাষ্ট্রবিহীন হবে বহু মানুষ

প্রস্তাবিত আইনে রাষ্ট্রবিহীন হবে বহু মানুষ

নিউজ ডেস্ক : প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনটি পাশ হলে বেশ কিছু সংখ্যায় মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে বলে ঢাকায় এক মত বিনিময় অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন পাওয়া এই বিলটির বেশকিছু বিষয় তুলে ধরা হয় অভিবাসন বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরু আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে।

সেখানে বলা হয়, এর ফলে অনেক ক্ষেত্রেই বাবা-মায়ের কৃতকর্মের ফলাফল চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের ওপর। তারা বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের এই আইনটির অপ-ব্যবহার হতে পারে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়। রামরুর পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবরার চৌধুরী বলেন, এর ফলে অনেকের নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যা অনেককে রাষ্ট্রবিহীন অবস্থায় ফেলতে পারে।

এই প্রস্তাব অনুসারে রোহিঙ্গা নাগরিকের সাথে কোনও বাংলাদেশির বিয়ের পর জন্ম নেয়া সন্তান নাগরিকত্ব পাবে না। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নুর খান লিটন বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার করার সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, “এই আইনের দুর্বলতার জায়গাটি হচ্ছে, অনেকের রাষ্ট্রবিহীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রধানত উর্দুভাষী জনগোষ্ঠী, দ্বিতীয়ত রোহিঙ্গা যারা আছেন তারা বাংলাদেশীদের বিয়ে করার পর তাদের সন্তানরা, তাদের রাষ্ট্রবিহীন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে"।

খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়, যারা প্রবাসী নাগরিকের মর্যাদা পাবেন তারা বেশকিছু অধিকার হারাবেন। যেমন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন না, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, স্থানীয় সরকারসহ কোনও পদে নির্বাচন করতে পারবেন না। কোনও রাজনৈতিক সংগঠন করতে পারবেন না ।

বংশসূত্রে নাগরিক, দ্বৈত নাগরিক, সম্মানসূচক নাগরিক, বৈবাহিক সূত্রে নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তারাও এইসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই আইনটিকে নিপীড়নমূলক ও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিহিত করেছেন।

আইনটি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আলাপ আলোচনা করার উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ করেন মানবাধিকার কর্মীরা। আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, এইসব মানুষেরা রাষ্ট্রবিহীন হয়ে পড়লে কি করা হবে তার কোনও নির্দেশনা নেই প্রস্তাবে ।

বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে আলাপ-আলোচনা করে এই আইনটির 'ত্রুটিপূর্ণ ধারাগুলো' বাদ দেয়ার দাবি করেন আলোচকরা।

তবে মন্ত্রীপরিষদ সচিব শফিউল আলম বিবিসিকে বলেছেন, এটি প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে মাত্র এবং সব পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে এতে ভবিষ্যতে পরিবর্তন আসতে পারে।
০৮ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে