ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর একটাই চাওয়া, তা হলো পরিবারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করা। এমন আগ্রহের কথা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ করেছেন তিনি।
নিজামীকে এ সুযোগ দেয়া যায় কি না তা নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ আলাপ-আলোচনা করছিলেন।
কারাগার সূত্র জানায়, মঙ্গলবার খুব ভোরে নিজামী ঘুম থেকে ওঠেন। অবশ্য রাতে দেরি করেই ঘুমান তিনি। ভোরে উঠে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন তিনি।
সূত্র জানায়, এরপর অন্য বন্দিদের সঙ্গে তাকেও সকালের নাস্তা দেয়া হয়। দুটি রুটি ও এক বাটি ভাঁজি দিলে কিছু ভাঁজি বাদে সব খেয়ে নেন। তবে ডিম, চা খাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ নেই তার। তার চায়ের অভ্যাস নেই বললেই চলে।
নিজামী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে চান কি না এবং প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না একজন ডেপুটি জেলার তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবেন বলে জানান।
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
১০ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাঁসির প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন কারা কর্মকর্তারা। বৈঠকে ছিলেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল, কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির, জেলার নেসার আলমসহ বেশ কয়েকজন কারা কর্মকর্তা।
কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার কমপ্লেক্সে ফাঁসি কার্যকরের সম্ভাবনা তৈরি হলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে পুরনো মঞ্চই বেছে নেয়া হয়েছে।
দুজন প্রধান জল্লাদের মধ্যে একজন এরই মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছেছেন। তার নাম রাজু। অপর জল্লাদ শাহজাহানের কারাগারে পৌঁছানোর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে সন্ধ্যা নাগাদ কাশিমপুর কারাগার থেকে শাজাহানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হতে পারে বলে জানিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, নিয়মানুযায়ী রায় পড়ে শোনানোর পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার সুযোগ রয়েছে।
তবে নিজামীর দল জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নিজামী তার স্বজনদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না।
আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না তার। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে নিজামীকে ফাঁসির রশিতে ঝোলাতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকবে না।
৯ মে সোমবার একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ করে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। রায় প্রকাশের পর সেটি পাঠানো হয় ট্রাইব্যুনালে। সেখান থেকে রায়ের কপি পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। সন্ধ্যার পর রায়ের কপি নিজামীকে পড়ে শোনানো হয়।
গত ৫ মে বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি শুধু বলেন, ‘ডিসমিসড’।
১০ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম