মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬, ০৬:২৩:৫৩

ফাঁসির রায় শুনে গলা শুকিয়ে যায় নিজামীর!

ফাঁসির রায় শুনে গলা শুকিয়ে যায় নিজামীর!

ঢাকা : জীবনের শেষ সময়টা কারাগারেই কাটাচ্ছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী।  কেন্দ্রীয় কারাগারের রজনীগন্ধা সেলের ৮ নম্বর কক্ষে আছেন তিনি।  সেল থেকে নিজামীর ফাঁসির মঞ্চের দূরত্ব মাত্র ২০ গজ।

ফাঁসির মঞ্চের প্রধান জল্লাদ কারাগারে এসে পৌঁছেছেন।  সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন।  উপরের নির্দেশের অপেক্ষায় কারা কর্তপক্ষ।  নির্দেশ এলেই জামায়াত নেতা নিজামীকে নেয়া হবে ফাঁসির মঞ্চে।  

১০ মে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ৯ মে কারাগারে আসে সেই কপি।  ফাঁসির রায়ের কপি রাতেই পড়ে শোনানো হয় মতিউর রহমান নিজামীকে।

সূত্রটি জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় রায় পড়ে শোনানোর পর গলা শুকিয়ে যায় নিজামীর।  এরপর ওই রাতে কারারক্ষীদের কাছ থেকে ১৭ বার পানি চেয়ে পান করেন তিনি।

সূত্রে জানা যায়, মৃতুদণ্ডের রায় পড়ে শোনানোর পর গভীর রাত পর্যন্ত নিজামী সেলের মধ্যে পায়চারী করছিলেন।  পরে রাত ২টার দিকে ঘুমাতে যান তিনি। ভোরা রাতে উঠে আবার ফজরের নামাজ আদায় করেন তিনি।

কারাগার সূত্র জানায়, অন্য বন্দিদের সঙ্গে নিজামীকেও সকালের নাস্তা দেয়া হয়।  দুটি রুটি ও এক বাটি ভাঁজি দিলে কিছু ভাঁজি বাদে সব খেয়ে নেন।  তবে ডিম, চা খাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ নেই তার।  তার চায়ের অভ্যাস নেই বললেই চলে।

এদিকে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে প্রধান জল্লাদ শাহজাহানও সন্ধ্যা নাগাদ কাশিমপুর কারাগার থেকে এসে পৌঁছাবেন।  প্রাণ ভিক্ষার আবেদন এবং পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে চকবাজারের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানো হবে নিজামীকে।

কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশের দোকানীরা জানান, ফাঁসি কার্যকরের আগে কারাগার এলাকার আশপাশের সব দোকান বন্ধ রাখতে কারা কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়ে থাকেন।  তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নির্দেশনা পাননি তারা।

তবে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর একটিই চাওয়া, তা হলো পরিবারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করা।  এমন আগ্রহের কথা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ করেছেন তিনি।


নিজামী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে চান কি না এবং প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না একজন ডেপুটি জেলার তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, নিয়মানুযায়ী রায় পড়ে শোনানোর পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার সুযোগ রয়েছে।  

তবে নিজামীর দল জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নিজামী তার স্বজনদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না।

 আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না তার।  তাই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে নিজামীকে ফাঁসির রশিতে ঝোলাতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকবে না।

এদিকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাঁসির প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন কারা কর্মকর্তারা।  বৈঠকে ছিলেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. ইকবাল, কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির, জেলার নেসার আলমসহ বেশ কয়েকজন কারা কর্মকর্তা।

নিজামীর রিভিউ খারিজ করে দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।  প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।  রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি শুধু বলেন, ‘ডিসমিসড’।
১০ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে