নিউজ ডেস্ক : জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর নিয়ে পাকিস্তান-বাংলাদেশ বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষ একে অন্যকে প্রচণ্ড রকম খুঁচিয়েছে। ভারতের অনলাইন টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ‘পাক, বাংলা ইন ওয়ার অব ওয়ার্ডস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে প্রকাশিত হয়েছে ওই প্রতিবেদন। এতে বলা হয়েছে, নিজামীর ফাঁসির বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। তারা বলেছে, তার একমাত্র পাপ বা অন্যায় ছিল পাকিস্তানের সংবিধান ও আইনের প্রতি অটল থাকা। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের আগের অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসি দেয়ায় পাকিস্তান গভীরভাবে শোকাহত। তার একমাত্র পাপ ছিল পাকিস্তানের সংবিধান ও আইনের প্রতি অটল থাকা।
দ্রুততার সঙ্গে এর জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। তারা বলেছে, পাকিস্তানের বিবৃতিতে আবারও প্রমাণ হলো নিজামী রাষ্ট্রদ্রোহী ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে সার্বভৌম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। নিজামীর ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেেশর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সর্বোপরি পাকিস্তানের বিবৃতি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ। তারা বার বার এ কাজটি করে আসছে।
তিনি বলেন, ইসলামাবাদের বিবৃতি এখন এটাই পরিষ্কার করলো যে, ১৯৭১ সালে কুখ্যাত মিলিশিয়া বাহিনী আল বদরের প্রধান ছিলেন নিজামী। এর মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রদোহিতা করেছেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর তিনি সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ নিয়েছিলেন। শাহরিয়ার আলম বলেন, তাদের বিবৃতি আরও একবার প্রমাণ করলো যে, নিজামী তাদেরই একজন ছিলেন। তারা যদি তাকে নিয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন তাহলে তাকে পাকিস্তানে নিয়ে নাগরিকত্ব দিতে পারতো।
পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেতাদের হত্যা করে বিরোধীদের চাপে ফেলা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের মূল্যবোধের পুরোপুরি বিপরীত প্রক্রিয়া। এই ফাঁসি সেইসব বাংলাদেশীর জন্য দুর্ভাগ্যজনক, যারা নিজামীকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে পার্লামেন্টে পাঠিয়েছিলেন।
পাকিস্তান বলেছে, এই ফাঁসি ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত ত্রিদেশীয় চুক্তির (ট্রাপার্টি এগ্রিমেন্ট) বিরোধী। ওই চুক্তি হয়েছিল পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। তাতে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এমন বিচার প্রক্রিয়া চালানো হবে না। -এমজমিন
১২ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম