সোমবার, ১৬ মে, ২০১৬, ১০:০৬:০৬

আটকের দেড় ঘণ্টা আগে সাক্ষাৎকারে যা যা বলেন আসলাম চৌধুরী

আটকের দেড় ঘণ্টা আগে সাক্ষাৎকারে যা যা বলেন আসলাম চৌধুরী

নিউজ ডেস্ক : গ্রেপ্তারের দেড় ঘণ্টা আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী বলেছিলেন, আজ-কালের মধ্যেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি। বিএনপির নতুন এই যুগ্ম মহাসচিব বলেছিলেন, পরিস্থিতি বুঝে হয় আদালতে নয়তো পুলিশের কাছে সরাসরি গিয়ে ধরা দেব আমি।

দল থেকে পদত্যাগ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারপারসনকে সব কিছু বলে আসছি। তিনি বললে পদত্যাগ করতেও রাজি আছি। তবে এখন পর্যন্ত তিনি বলেননি।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম সম্প্রতি ভারতে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টি নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সরকারি দলের নেতারা অভিযোগ করছেন, সরকারকে উৎখাত করতেই ওই সাক্ষাৎ করেন আসলাম। অন্যদিকে আসলামের দাবি, গত মার্চে ব্যক্তিগত সফরে ভারতে গেলে একজনের মাধ্যমে সাফাদির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁরা বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরেছেন, একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। কিন্তু কোনো বৈঠক করেননি।

এমন পরিস্থিতিতে আসলাম চৌধুরী ফোনে গতকাল জানিয়েছিলেন, তিনি ধরা দেবেন। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না।

গ্রেপ্তার করা হলে কী করবেন; জানতে চাইলে আসলাম চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার করলে নতুন কী হবে! কী বলব? আমার সঙ্গে যে সাফাদির বৈঠক হয়েছে তার কোনো লিখিত প্রমাণ আছে? কত লোকের সঙ্গে কত লোকের কথা হয়। বাংলাদেশেও কূটনৈতিক অঙ্গনে অনেক নেতা ও ব্যক্তির সঙ্গে অনেকের পার্টিতে দেখা ও আলোচনা হয়। এখন কে কোথাকার এজেন্ট তা জানার বা বোঝার উপায় কী? এভাবে হলে তো কেউ কারো সঙ্গে কথা বলবেন না। আসলাম স্বীকার করেন, দিল্লির ঘটনা নিয়ে এত ঝামেলায় পড়তে হবে বা এত হইচই হবে, আমি তা বুঝতে পারিনি।

এদিকে, আসলাম চৌধুরীকে দল থেকে কারণ দর্শাও নেটিশ দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল বিএনপিতে দিনভর গুঞ্জন চলেছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ একাধিক নেতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা বলেছেন, এ সম্পর্কে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আসলাম চৌধুরীকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে চাপে পড়া বিএনপির বড় একটি অংশ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের পক্ষে। বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তায় অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নেতারা বলেছেন, আসলামের দায় বিএনপি কেন নেবে? এরপর খালেদা জিয়া তাঁকে ডেকে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বলেছেন, ভবিষ্যতে সতর্কভাবে চলতে। তবে আসলাম জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত কাজে তিনি দিল্লি গিয়েছিলেন।

কালের কণ্ঠকে আসলাম গতকাল জানিয়েছেন, কোনো শোকজের কথা তাঁর জানা নেই। তা ছাড়া শোকজের দরকার কী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ম্যাডাম (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) বললে পদত্যাগ করতে রাজি আছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিতে কারা আমার ওপর রুষ্ট জানি না। আমি অনেকের চাইতে বেশি যোগ্য না হতে পারি; তবে একেবারে কম যোগ্য নই। এফসিএ পাস ছাড়া বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে উত্তীর্ণ হয়েছি। এরপর ব্যবসা-বাণিজ্য করছি। তবে একটি যোগ্যতা আমার কিছুটা কম আছে—আমি কখনো এমপি ছিলাম না।

এত ঘটনার পর চেয়ারপারসন আপনাকে দল ছাড়তে বলেছেন কি না জানতে চাইলে আসলাম চৌধুরী বলেন, চেয়ারপারসনকে আমি জানিয়েছি, আমি দিল্লিতে ব্যবসার কাজে গেছি। যার সঙ্গে ছবি ছাপা হয়েছে, তিনি কোথায় কার সঙ্গে জড়িত জানতাম না। এখন দেখি অনেক বড় ঘটনা হয়ে গেছে।

শোনা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসের কৃপায় আপনি যুগ্ম মহাসচিব পদ পেয়েছেন। তাঁর দুই আত্মীয় আপনার কম্পানিতে কাজ করেন বলে শোনা যায়—এমন প্রশ্নের জবাবে আসলাম চৌধুরী বলেন, যারা এসব অভিযোগ তুলছে তাদের কাছে আমি ওই দুজনের নাম জানতে চাই।- কালের কন্ঠ
১৬ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে