নিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে মারধর পরে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে কান ধরে উঠ-বস করানোর ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
শুধু তাই নয়, এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক ঘটনা আখ্যায়িত করে এর প্রতিবাদ স্বরূপ কান ধরা ছবি অনেকেই নিজ নিজ ওয়ালে পোষ্ট করে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।
এদিকে ‘একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় বাংলাদেশকেই কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে’, এমন মন্তব্য করে শাহবাগে জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে ‘লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ’। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তারা প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষকে।
অন্যদিকে গতকাল এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ এ ঘটনাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিবাদ জানিয়ে ইফতেখার আমিন নামে একজন লিখেছেন, ‘আমার বাবাও প্রধান শিক্ষক ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের শিক্ষকের জায়গায় আমি যেন বাবাকেই দেখছি! যে জয় বাংলা শুনে উদ্বেলিত হয়ছি, আলোড়িত হয়ছি, চেতনায় শাণিত হয়েছি। সেই জয় বাংলা শুনে আজ প্রতিমুহূর্তে কুঁকড়ে যাচ্ছি। নাহ, একজন শিক্ষকের সন্তান হিসেব বিচার চাই না। ওটা হাস্যকর এদেশে এখন। 'জয় বাংলা' বলে বিশ্বজিৎকে হত্যা? ওটা অনাকাঙ্খিত! ‘জয় বাংলা’র সরকারের সচিবের গলাধাক্কায় মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যা? ওটা মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মানুষী! ‘জয় বাংলা’ বলে শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানো? ওটা তো নস্যি ঘটনা ম্যান! যে দেশে গলা কেটে ফেলা জায়েজ, সেই দেশ এমপি মহোদয়ের (!) একটু কান ধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন সেই তো কপাল! এমপি হইলে বুঝি আর দুষ্টামি করতে ইচ্ছা করতে পারেনা! এই সামান্য একটু দুষ্টুমি নিয়া এত্তো কথা! বাঙালি পারেও..!’
আবার কেউ কেউ নিজেদের কানধরা ছবি কিংবা ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এরকম কান ধরে উঠবস করা একটি ভিডিও পোস্ট করে রাকিব কিশোর লিখেছেন, ‘জাতির সর্বোচ্চ পদে আসীন এবং জাতির মেরুদন্ড বলে স্বীকৃত মহান শিক্ষককে অপমান করলাম আমরা। আমিও একজন অপরাধী, আমারো শাস্তি হওয়া উচিত। আমি লজ্জিত স্যার...।’
১৭ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন