বুধবার, ১৮ মে, ২০১৬, ১১:২৯:০৮

ফেসবুকে অভিনব প্রতারণা, ধরা খেল বন্ধু

ফেসবুকে অভিনব প্রতারণা, ধরা খেল বন্ধু

ঢাকা : কারো সাথে কারো পরিচয় নেই।  কেউ কাউকে চেনেনও না।  অথচ ফেসবুকে বন্ধুত্ব।  সেই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই বেড়াতে আসার প্রস্তাব দেয়া হয় বন্ধুকে।

 
এরপর ছলেবলে কৌশলে কোনো বাসা বা ফ্ল্যাটে আটকে রেখে আটক ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা।   

এমনই একটি চক্রের আস্তানা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের দুই যুবককে।  এদের একজন কলেজছাত্র লিমন (২২)। অপরজন আমিরুল ইসলাম (২৬)।
 
নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
 
এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ওই চক্রের প্রধান আলামিন (২৪)।
 
বুধবার দুপুরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই মনিরুজ্জামান খান।
 
তিনি বলেন, ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে গত ১৩ মে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার বাসিন্দা শহীদ মিয়ার ছেলে ও রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র লিমনকে নারায়ণগঞ্জে বেড়াতে আসতে বলেন ওই চক্রের সদস্যরা।  
 
তিনি বলেন, লিমন নারায়ণগঞ্জে দেখা করতে গেলে তাকে কৌশলে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এরপর তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়।  এজন্য একটি বিকাশ নম্বরও তাদের দেয়া হয়।
 
পরদিন এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন লিমনের বাবা ফজলুর রহমান।  এরপরই লিমনকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ।
 
এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, ১৫ মে তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তায় নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় ইব্রাহিমের বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় লিমনকে।  এ সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আমিরুল ইসলাম নামে আরেক যুবককেও পাওয়া যায়।
 
তাকেও ফেসবুকে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে ডেকে এনে বন্দি করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।
 
উদ্ধার হওয়া লিমনের বাবা ফজলুর রহমান বলেন, ছেলের মোবাইল দিয়ে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আপনার ছেলে নারীঘটিত ঘটনায় ফেঁসে গেছে।  তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে।  দুই লাখ টাকা বিকাশ করে পাঠান।  টাকা পাঠালে আপনার ছেলেকে মুক্তি দেয়া হবে।  নইলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
 
গ্রেফতার হওয়া আলামিনের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, চক্রটিতে পাঁচজন সদস্য রয়েছে। এরা ফেসবুকে আকর্ষণীয় নাম দিয়ে ফেক আইডি খুলে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে।  এরপর ওই ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলে সুবিধামতো জায়গায় ডেকে নিয়ে বন্দী করা হয়।
 
তিনি বলেন, এরপর স্বজনদের কাছে টাকা চেয়ে ফোন দিতে বলে।  ওদের কথামত টাকা দিতে অস্বীকার করলে ভিকটিমের ওপর চলে বর্বর নির্যাতন।  নির্যাতনের কারণে স্বজনদের কাছে কান্নাকাটি করে টাকা পাঠাতে অনুরোধ করে তারা। এভাবে কয়েকজনের কাছ থেকে তারা হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের অর্থ।
 
তিনি বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
 
এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।  আলামিন ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন ইব্রাহিম, লিজেন্ড, দিগন্ত, ও জিকো।  এরা সবাই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কলেজের ছাত্র।
 
এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আলামিন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
১৮ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে