নিউজ ডেস্ক : উড়ো চিঠির মাধ্যমে হুমকি দেয়া হয়েছে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান কামদা প্রসাদকে। এর ফলে তিনি ও তার পরিবার জীবনহানির শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হুমকির শিকার কামদা প্রসাদ।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার সকালে তার বিভাগের দপ্তরে ডাকযোগে উড়ো চিঠিটি আসে। চিঠিতে প্রাপক হিসেবে তার নাম লেখা রয়েছে। প্রেরকের স্থলে কারও নাম নেই।
কামদা প্রসাদ সাহার ভাষ্য, তনু হত্যা মামলার উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, তিনি সহজ-সরল একটি বিষয়টিকে ঘোলা করছেন। তিনি কি চান যে তার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাক?
কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, চিঠি পাওয়ার পর কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি জিডির আবেদন করেছেন তিনি। তাতে বলা হয়েছে, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা জীবনহানির আশঙ্কায় ভুগছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রব বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। জিডির আবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের ভেতর একটি ঝোপ থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
তনু হত্যার তদন্তের শুরুতেই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্ক ওঠে। প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এতে তনুর মাথার পেছনের জখমের কথা গোপন করা হয়। কানের নিচের আঁচড়ের দাগকে পোকার কামড় বলা হয়।
তনুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয় করতে পুলিশ কবর থেকে লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে। আদালতের নির্দেশে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে গত ৩০ মার্চ তনুর লাশের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হয়। এই মেডিকেল বোর্ডের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা। দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। কবে দেওয়া হবে, সেটাও নিশ্চিত করে বলছেন না এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তনু হত্যার দুই মাস পূর্ণ হয়েছে গত ২০ মে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এখন পর্যন্ত খুনি বা খুনের কারণ শনাক্ত করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থাগুলো। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির দিকে তাকিয়ে আছে তনুর পরিবার।
ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া নিয়ে সিআইডির সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের রশি টানাটানি চলছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেছে এই টানাপোড়েনে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সিআইডির কাছে চিঠি দিয়েও ডিএনএ প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে পারেনি।
অন্যদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদালত থেকে ডিএনএ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডকে পরামর্শ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন। সূত্র : প্রথম আলো
২৪ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন