বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬, ০৩:৫২:০৫

‘খালেদা যাবে জেলে, পদ তদবির থেমে নেই’

‘খালেদা যাবে জেলে, পদ তদবির থেমে নেই’

নিউজ ডেস্ক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্ত্র রায় বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জেলে যাচ্ছেন প্রতিদিন এই খবরটা গণমাধ্যমে আসছে। কিন্তু নেতাকর্মীদের সিভি (জীবন বৃত্তান্ত) দেওয়া বন্ধ হয়নি। কিছু হওয়ার জন্য, পদের জন্য তদবির থেমে নেই। তিনি আরো বলেন, আজ পর্যন্ত শুনলাম না অমুক নেতার বাসায় বৈঠক হয়েছে সংকট মোকাবেলার জন্য। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ম্যাডামের কিছু হলে কি করা হবে। সেই আলোচনা নেই। কাকে উপরে নিবে, কাকে কী দিবে সেই আলোচনা হচ্ছে।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর চন্ত্র রায় বলেন, যাকে ছাড়া দল চলবে না তার বিপদের জন্য কিছু করি না। আর আমরা পদের জন্য দৌঁড়াদৌড়ি করতেছি, মানত করতেছি। মাজারে মাজারে যাই, জ্যেন্ত মাজারেও যাই মৃত মাজারেও যাই।

তিনি বলেন, ৩০ মে পালনের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির চেতনাকে শাণিত করতে হবে। আগামী দিনে জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপরে যদি কোনো আঘাত আসে এই শাণিত অস্ত্রের আঘাতে তা যাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।

খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, সরকার অনেক পরিকল্পনা করতে পারে, জেলে নেবেন। আসলে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়না। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আমরা যদি পথ সৃষ্টি করে দেই, এটা আমাদের সঠিক কাজ হবে না। তিনি বলেন, রাজনীতিতে কিছু করব না, এটা ভেবে বসে থাকলে চলবে না। কিছু ঘটার আগে করতে হবে।বিনা আন্দোলনে বিনা সংগ্রামে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় না। অন্যায়কে প্রতিরোধ করা যায় না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা যদি মনে করি সরকার চক্রান্ত করছে তাহলে আগাম প্রস্তুতি থাকা ভাল।

তিনি বলেন, আন্দোলন করতে হলে পদ-পদবীর দরকার হয়না। ১/১১ মোকাবিলা করতে স্থায়ী কমিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমপি-মন্ত্রী কাউকে পাওয়া যায়নি। যাদের পাওয়া গেছে তারা ছিল জেলখানায়। বাকি বিদেশে যে যেভাবে পেরেছেন জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। তখন কিন্তু মোকাবিলা করেছে তারাই যাদের কোনো পদ ছিল না, তৃণমূলের কর্মীরা। সুতরাং আপনারা প্রস্তুত হউন। যাকে হারালে আমরা বাঁচবো না তাকে আমরা হারাতে দিবো কেন? তাকে ছাড়া দল চলবে না। তাকে আমরা জেলে নিতে দেব কেন?

তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্ম হয়েছে চক্রান্ত মোকাবেলা করার জন্য। কিন্তু সেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে চক্রান্তের জালে আত্মাহুতি দিতে হয়েছিল। বিএনপিকে নির্মূল করার জন্য দেশে বিদেশে চক্রান্ত চলছে। প্রতিনিতই হচ্ছে। এই বিএনপিতে যখনই যে নেতৃত্ব দিবে তখন তাকে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।’

গয়েশ্বর বলেন, এটা মোকাবেলা করতে পারবে কর্মীবাহিনী। নেতাদের যা করার দরকার তা করতে পারছে না। কর্মীবাহিনী যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে সরকারের চক্রান্ত বিএনপির উপর দিয়ে চালানো সম্ভব হবে না। অতীতে যারা ১/১১ সময় যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের আমরা চিনি। তারা সঠিক পথে থাকলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির শক্তি উৎসাহ ও প্রেরণা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া, পরবর্তীতে তারেক রহমান। ওই দুই হলো আমাদের শক্তি, চলার পথের সাহস। তাদের নির্দেশনাই আমাদের চলার পথ। তাদের হিসেবের খাতায় যদি ভুল থাকে তাহলে তার হিসেব মিলানো কত কষ্ট। তারা যদি জেনে শুনে শত্রুদের অবস্থান দেন সেখানে তো কর্মীরা হতাশ হয়। কখনও কখনও ভয় পায়। নেত্রীকে শক্ত হতে হবে। তাকে চক্রান্তের পয়জনগুলোকে পরিস্কার করতে হবে। তাহলে কর্মীরা জীবন দিতে দ্বিধা করবেনা।আর নেত্রী যাদের পাশে বসাবেন, দুই দিন পর চক্রান্ত করলে তাদের গায়ে থাপ্পড় মারতে সময় লাগবে। সেই কারণে চক্রান্ত-মির্জাফরী যারা করে তাদের জন্য, দেখি না আরেকটু, এটা কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না। নেত্রীকে অতীত বর্তমান চিন্তা করে কাজ করতে হবে। দলকে সংগঠিত করতে হবে।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত ভাসানী ভবনে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) মহানগর বিএনপির যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ৩০ মে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এ যৌথসভার আয়োজন করা হয়। ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান সেনা অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নিহত হন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। যৌথ সভায় অংশ নেন- ঢাকা মগহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
২৬ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে