ঢাকা : আদালত প্রাঙ্গণে তরুণীর গগনবিদারী চিৎকার, আদালতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি!
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিচারিক আদালতের সামনে এক তরুণীর এমন গগনবিদারী চিৎকারে ভিড় জমে যায়। কান্নায় ভারী হয়ে উঠে আদালত প্রাঙ্গণ।
চিৎকার করে তিনি বলতে থাকেন, ‘আমার সামনে লিটন চৌধুরী আমার ভাইকে কুপিয়েছে। আদালত তাকে খালাস দিয়েছে। আসামিরা খালাস পেতে দুই কোটি টাকা খরচ করেছে’।
ঘটনার বিবরণ: মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার রাজানগর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান খন্দকার হত্যা মামলায় প্রধান আসামি লিটন চৌধুরীকে খালাস দেন আদালত।
এ রায় ঘোষণার পরপরই নিহতের বোন তরুলতা আদালতের পাঁচ তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় দু’ব্যক্তি তাকে ধরে ফেলেন। তাতে প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
নিহত ভাইয়ের জন্য বোনের এমন আর্তচিৎকারে মানুষের ভিড় জমে যায় ট্রাইব্যুনালের সামনের বারান্দায়।
তরুলতা চিৎকার করে বলতে থাকেন, আমার সামনে আসামি লিটন চৌধুরী আমার ভাই আসাদকে কুপিয়েছে। জবানবন্দিতে লিটন চৌধুরীর নামও এসেছে। বিচারক তাকে খালাস দিয়েছেন। আসামিরা বলেছেন, খালাস পাওয়ার জন্য তারা দুই কোটি টাকা খরচ করেছেন।
এ মামলায় প্রধান আসামি খালাস পেলেও বাকি ৩ আসামিকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড এবং ৩ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মো. আলমগীর হোসেন, মোহসিন খান ও সাগর। দশ বছর দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অলিয়ার রহমান অলি, মো. আমিনুল ইসলাম খান ও মিজানুর রহমান মিজান।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন লিটন চৌধুরী ওরফে জেআই লিটন চৌধুরী, জিন্নাহ চৌধুরী, ইলিয়াছ হোসেন, বাসেক আলী ওরফে বাছেদ আলী খান, আসলাম শেখ, সোহাগ শেখ, আক্কাছ আলী, জুয়েল, কাওছার ব্যাপারী ও বিপ্লব ওরফে ইকবাল।
রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের নিহতের মটরবাইক পুড়িয়ে ক্ষতিসাধনের জন্য আরো ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর দিবাগত রাত সোয়া ৯টার দিকে মোটরবাইকযোগে আসাদ রাজনগর বাজারে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে মিজানুর রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম