চট্টগ্রাম : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এ ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।
তিনি বলেন, বাবুল আক্তার একজন সৎ, নির্ভীক ও পরিশ্রমী অফিসার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি দমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে টার্গেট করা হয়েছে। এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অনেক পুলিশ কর্মকর্তাও একই কথা মনে করছেন। চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোক্তার হোসেন মনে করেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাবুল আক্তারের যে ভূমিকা সেই প্রেক্ষিতেই তার স্ত্রী টার্গেটে পরিণত হতে পারেন।
মোক্তার হোসেন বলেন, বাবুল আক্তার অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী ছেলে, পুলিশে উদীয়মান একজন কর্মকর্তা। চট্টগ্রামে জঙ্গি অভিযানসহ বহু অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছেন বাবুল আক্তার।
বাবুল আক্তার তার কাজের জন্য প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক অর্থাৎ দুবার রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ পদকও পেয়েছেন একবার।
বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার ঘটনায় কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে কি না- এমন প্রশ্নে মোক্তার হোসেন বলেন, তদন্ত শেষ করে এ বিষয়ে বলতে পারবেন তারা।
তবে মোক্তার হোসেন বলেন, সমাজের চোখে যারা খারাপ মানুষ, তাদের বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযান চালিয়েছেন বাবুল আক্তার, সুতরাং এ বিষয়টা মাথায় রেখেই তদন্তের কাজ করছেন তারা।
একই ধরনের কথা বলেছেন পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।
তিনি বলেন, বাবুল আক্তার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যেহেতু অনেক অভিযান পরিচালনা করেছেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকার আশঙ্কাটাই আমাদের অনেক। আমরা কয়েকটি পয়েন্ট ধরে এগুচ্ছি। সিসিটিভি ফুটেজও পেয়েছি। চেষ্টা চলছে তাদের ধরার।
কখনো কি নিজের বা পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাবুল আক্তার? পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলছেন, তিনি কখনো এমন আশঙ্কার কথা শোনেননি।
তবে চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, গত বছরের শেষ দিকে চট্টগ্রামের খোয়াজনগরে জঙ্গি অভিযানের পর তার সঙ্গে আলাপকালে বাবুল আক্তার বলেছিলেন, তিনি আতঙ্কের মধ্যে আছেন, তার মনে হচ্ছিল- জঙ্গিরা তাকে টার্গেট করেছে।
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার জঙ্গিদের টার্গেট হলে তার স্ত্রীকে কেন হত্যা করা হলো?
গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোক্তার হোসেন মনে করেন, পুলিশের মনোবল ভাঙার জন্য অপরাধীরা এমন কাজ করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হত্যার ঘটনার পর সারাদেশের পুলিশের মধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে তারা বলছেন, কোনো ধরনের হামলায় পুলিশকে দমাতে পারবে না অপরাধীরা।
বাবুল আক্তারের সাম্প্রতিক ফেসবুক স্ট্যাটাসেও উঠে এসেছে তার কাজের কথা, ‘পুলিশের চাকরিতে সবাইকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব নয়।
হয় অভিযোগপত্র, না হয় চূড়ান্ত রির্পোট। এর মাঝামাঝি কোনো অবস্থানে থাকার সুযোগ নেই। সে কারণে অনেকের বিরাগভাজন হয়ে থাকতে পারি। তবে এতটুকু বলতে পারি নিজ স্বার্থের জন্য কিছু করিনি।’ সূত্র : বিবিসি বাংলা
৫ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম