সোমবার, ০৬ জুন, ২০১৬, ০৪:১০:০৫

দুই ধাপ দূরে মীর কাসেমের ফাঁসির রশি

দুই ধাপ দূরে মীর কাসেমের ফাঁসির রশি

ঢাকা : মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ফাঁসির রশি দুই ধাপ দূরে।  প্রথম ধাপ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন এবং দ্বিতীয় ধাপ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা।

দুটোই খারিজ হলে ফাঁসির রশিতে ঝুলতে হবে মীর কাশেম আলীকে।

মীর কাসেমের ফাঁসির রশি আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।  নিয়ম অনুযায়ী এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

পরে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল।  সেই মৃত্যু পরোয়ানা মীর কাশেম আলীকে পড়ে শোনাবে কারা কর্তৃপক্ষ।  আইন অনুযায়ী, এখন ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন মীর কাশেম।

রিভিউতে তার আবেদন খারিজ হলে আর কোনো আইনি প্রতিকার থাকবে না।  সেক্ষেত্রে দোষ স্বীকার করে নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন মীর কাশেম।  সেই আবেদন নাকচ হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারা কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবেন।

এদিকে আজ সোমবার সকালে বিচারপতিদের স্বাক্ষর শেষে ২৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রকাশ করে সুপ্রিমকোর্ট।  এরপর এটি সুপ্রিমকোর্টের ওয়েব সাইটে আপলোট করা হয়।

গত ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে মীর কাশেম আলীকে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।  তবে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ একটি অভিযোগে এ দণ্ড বহাল রাখেন।

তার বিরুদ্ধে আনিত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে হত্যার দায় থেকে  জামায়াত নেতা অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।

আপিলে দেয়া সেই রায়েরই পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নিজেই লিখেছেন। পরে এতে স্বাক্ষর করেন অপর চার বিচারপতি বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।

রিভিউতে তার আবেদন খারিজ হলে আর কোনো আইনি প্রতিকার তার থাকবে না।  সেক্ষেত্রে দোষ স্বীকার করে নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন মীর কাশেম।  সেই আবেদন নাকচ হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারা কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবেন।

মীর কাশেম আলী ষষ্ঠ ব্যক্তি যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন।  এর আগে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়াদিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলীকে।  

পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় তার যুদ্ধাপরাধের বিচার।  ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
৬ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে