নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী খুন হওয়ার পর সারা দেশে চলছে পুলিশি অভিযান। অভিযানে ইতিমধ্যে মাগুরা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আলমগীর বিশ্বাস, নরসিংদী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা শামসুল ইসলাম, নরসিংদী শহর জামায়াতের আমির জহিরুল ইসলাম মানিক ও জেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি আযম মাইনুদ্দিনসহ বেশকিছু জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী আটক হয়েছেন।
গ্রেফতার এড়াতে সারা দেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে জামায়াত ও দলটির ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার উদ্দেশেই পুলিশ জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তিনি দাবি করেন, গ্রেফতারকৃতরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। সরকার দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার উদ্দেশেই জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাচ্ছে।
জানা যায়, পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী খুনের পর অভিযানে ৯ জুন এক কর্মীসহ মাগুরা জেলা জামায়াতের আমিরকে গ্রেফতার করা হয়। ৭ জুন রাতে নরসিংদী জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা শামসুল ইসলামকে ও গত ৮ জুন রাতে নরসিংদী শহর জামায়াতের জহিরুল ইসলাম মানিক ও জেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি আযম মাইনুদ্দিনসহ জামায়াত এবং শিবিরের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
নেতা-কর্মীরা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্পরতায় আতঙ্কে আছেন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদের পরিবারের মধ্যেও চলছে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি। এ অবস্থায় মনোবল ধরে রাখতে কর্মীদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা।
নেতারা বলেন, বেশ কিছুদিন আগেও জামায়াত নেতা ইমরুল কায়েসের মৃত্যুর পর থেকে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক হয়ে নিরাপদে থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। জামায়াত-শিবিরের একাধিক নেতা-কর্মী এমন তথ্য জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটক জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায়ও জামায়াত ও শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
জামায়াতের এক কর্মী জানান, সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন আমাদের আন্দোলন একদিনের নয়। সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রাজপথে মোকাবিলা না করতে পেরে দীনের দাওয়াতে দায়িত্ব পালনকারী ভাইদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সে জন্য আপাতত নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলার তৃণমূল কর্মীদের কাছে এমন বার্তা এসেছে বলে একাধিক জামায়াত-শিবিরের কর্মী জানিয়েছেন।
জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, জামায়াতে ইসলামী হত্যা ও সন্ত্রাসের নোংরা রাজনীতিকে ঘৃণা করে। তাই সাম্প্রতিক সংঘটিত কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নেই। কোনো হত্যাকাণ্ডে জামায়াতের জড়িত থাকা বা মদদ দানের প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জামায়াতকে দায়ী করে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলেই তার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করে অসত্য বক্তব্য দেওয়া সরকারের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। আমরা সরকারের অসত্য বক্তব্যের প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও তারা একই অসত্য বক্তব্য বার বার দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। -বিডি প্রতিদিন
১২ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস