রবিবার, ১২ জুন, ২০১৬, ০২:১০:৫০

আটক যুবক মিতু খুনের ‘মূল অংশগ্রহণকারী’ বলে জানিয়েছে গোয়েন্দারা

আটক যুবক মিতু খুনের ‘মূল অংশগ্রহণকারী’ বলে জানিয়েছে গোয়েন্দারা

নিউজ ডেস্ক :চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে তাকে নগরীর বায়েজিদ থানার শীতলঝর্ণা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক যুবকের নাম মো. শাহজামান ওরফে রবিন (২৮)। সে মিতু খুনের ‘মূল অংশগ্রহণকারী’ বলে জানিয়েছে গোয়েন্দারা। পুলিশ ধারণা করছে, রবিনই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়া ‘অনুসরণকারী’ যুবক।  রবিন কুমিল্লার লাকসামের মো. শাহজাহানের ছেলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করলেও সে বর্তমানে বেকার। রবিনকে মামলায় রিমান্ড চেয়ে আজ রোববার আদালতে পাঠানো হবে। তবে সে খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে কিনা এ ব্যাপারে খোলাসা করে কিছু বলেনি পুলিশ। এ নিয়ে এসপিপত্নী হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানালো চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় সিএমপির নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়া যুবকের চলাফেরা, পোশাক ইত্যাদিসহ নানা তথ্যে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত রবিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তারপরও আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করছি। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে তার সম্পৃক্ততার ব্যাপারটি নিশ্চিত হতে পারব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা এই আসামিই মূল খুনি বলে ধারণা করছেন সিএমপি কমিশনার। তিনি জানান, খুনের সময় ওই এলাকায় তার অবস্থান ছিল সন্দেহজনক। বিভিন্ন সংগৃহীত ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে রবিনের চেহারা আরো গভীরভাবে মেলানো হচ্ছে। তবে রবিন খুনের মূল পরিকল্পনাকারী নাকি ভাড়াটে কিলার তা এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। ভিডিও ফুটেজের চিত্র অনুযায়ী রবিন মিতুকে অনুসরণ করতে করতে রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশে চলে যায় এবং খুন শেষে সে মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়। সকাল ৬টা ৩২ মিনিটের ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু তার সন্তান মাহিরের হাত ধরে গলির মুখে এসে পৌঁছান। এর ঠিক ১৫ সেকেন্ড পর বিপরীত প্রান্তে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা এক যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাকে অনুসরণ করে পিছন পিছন হাঁটতে থাকে। ৬টা ৩২ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে তিনি ওয়েল ফুডের সামনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে পিছন থেকে দৌড়ে মিতুর দিকে এগিয়ে যায় ঘাতক। ঠিক একই সময়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আগে থেকেই নিরিবিলি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক মিতুর উপর হামলা করে। হামলা শুরু এবং শেষ করে মোটরসাইকেলে উঠতে ঘাতকরা সময় নিয়েছে মাত্র ১৭ সেকেন্ড! এর মধ্যে মাহমুদা খানম মিতুর শরীরে করা হয়েছে ৮টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও দুটি গুলি। ৬টা ৩৩ মিনিট ৫ সেকেন্ডে খুনিরা কিলিং মিশন শেষ করে মোটরসাইকেলে চেপে বসে। ৬টা ৩৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে তিন খুনি মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়। যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল তার মাথায় ছিল হেলমেট। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পিছনে দুজন বসা। দুজনের মধ্যে মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছিল ছুরি। আর পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে ছিল পিস্তল। ধারণা করা হচ্ছে এই তৃতীয়জনই ছিল গ্রেপ্তারকৃত রবিন। এর আগে গত ৭ই জুন রাতে হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ফরহাদাবাদ থেকে মিতু খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির নেতা আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন কালো রঙের মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মাইক্রোবাসের চালককেও। চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে এসপিপত্নী মিতুকে খুন করার সাতদিন পেরুলেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। এই অবস্থায় আজ রোববার চট্টগ্রামে আসছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক মো. শহীদুল হক। এদিকে দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযানের প্রথম দিনে শুক্রবার চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাতজন গ্রেপ্তার আছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, দুই ধরনের অভিযান আছে- একটা ব্লক রেইড ও অন্যটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে। দুটি অভিযানই চলছে। আমি কোয়ালিটি অ্যারেস্টের পক্ষে। - এমজমিন
১২জুন২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/আরিফ/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে