বুধবার, ১৫ জুন, ২০১৬, ০১:২০:৫১

টক অব দ্য কান্ট্রি : পকেটমারের খপ্পরে সরকার দলীয় দুই এমপি!

টক অব দ্য কান্ট্রি : পকেটমারের খপ্পরে সরকার দলীয় দুই এমপি!

নিউজ ডেস্ক :  এবার পকেট মারের খপ্পরে পড়েছেন জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় দুই এমপি! ঝিনাইদহে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে বেরসিক পকেটমার এমপিদ্বয়ের পকেট কেটে মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে।

এ বিষয়টি এখন ঝিনাইদহ ছাপয়ে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও চলছে নানা আলোচনা। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারের জাঁদরেল তিন মন্ত্রীও।

এদিকে বাবুল আজাদ নামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এক ঠিকাদার তার ফেসবুকে ঝিনাইদহের দুই এমপি আব্দুল হাই ও আনোয়ারুল আজিম আনারসহ নেতাদের পকেটমারের ঘটনাটি উল্লেখ করে চোর ধরে টাকা উদ্ধারের আহ্বান জানান পুলিশের প্রতি।

ফেসবুকে বাবুল আজাদ লিখেছেন ‘আজ ১৪ই জুন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তিন জন মন্ত্রী মো. নাসিম, রশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু এসেছিলেন ঝিনাইদহ করতিপাড়া আনান্দ গোপাল গাঙ্গুলীর শোক সভায়। এই স্থান থেকে আমার প্যান্টের পকেট থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পকেট মেরে নিয়েছে।

সেই সাথে তিনি আরও লিখেন, আমাদের মাননীয় এমপি সাহেব মো. আব্দুল হাই ভায়ের মানিব্যাগসহ টাকা নিয়ে গেছে। কালিগঞ্জের এমপি আনার ভায়ের মোবাইল নিয়ে গেছে। শৈলকুপা দুদসর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোয়েব জোয়ার্দ্দারের উপঞ্চাশ হাজার টাকাসহ আরো অনেকের টাকা, মানিব্যাগ ও মোবাইল পকেট মেরে নিয়েছে। আমি ঝিনাইদহ জেলা পুলিশকে অনুরোধ করবো যে আপনারা সাংবাদিক ভাইদের কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়ে এই সব চোরদের ধরুন। টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করার ব্যবস্থা করুন।

এদিকে বাবুল আজাদের ফেসবুকের এই স্ট্যাটাস নিয়ে নানা রকম রসাত্মক মন্তব্যও করা হয়েছে। এরমধ্যে একে আজাদ নামে একজন লিখেছেন ‘পকেট মারা চোরও আছে এখানে?’

এছাড়া ডিস রতন লিখেছেন ‘এটাতে বিএনপি জামায়াতের হাত থাকতে পারে।’ এমডি মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন ‘বাবুল ভাই আসলে বিষয়টা নৈহাটির শসানের ভৌতিক কোন ব্যপার কি না খতিয়ে দেখা উচিৎ।’ মহারাজপুর লিখেছেন, ‘নিজের নিরাপত্তা নিজেরা দিতে পারেনা তাহলে জনগণের নিরাপত্তা কিভাবে দিবেন?’। জাফর হোসাইন লিখেছেন, ‘অসৎ ভাবে উপার্জিত টাকা এভাবে হারিয়ে যায় ভাইয়া’।

এমডি রফিক আজাদ লিখেছেন ‘ডাকাতের মাল চোরে খাইছে’। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার বাসিন্দা ঠিকাদার বাবুল আজাদ নিজের ফেসবুকে পকেটমারের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঝিনাইদহ শহর থেকে কোরাতিপাড়া পর্যন্ত নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ছিল। রাস্তার দু ধারে পোশাক পরিহিত অস্ত্রধারী শত শত পুলিশ। আছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। এর মাঝেও এমন ঘটনা ঘটবে ধারণাও ছিল না।

তিনি জানান, দুই এমপি ছাড়াও, সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন চেয়ারম্যান, দলীয় নেতাকর্মী ও ঠিকাদারসহ অনেক নামিদামী ব্যক্তি পকেটমারের শিকার হয়েছে। কিন্তু লজ্জায় কেউ মুখ খুলছে না।

তিন মন্ত্রীর সমাবেশস্থলে পকেটমারের ঘটনায় ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুরিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমি তো বিষয়টি জানি না। তাছাড়া ওই অনুষ্ঠানে আমি যাই নি। খোঁজ নিয়ে পরে বলতে পারবো।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কোরতিপাড়া গ্রামে পুরোহিত আনন্দ গোপাল হত্যার প্রতিবাদে স্থানীয় স্কুল মাঠে সরকারের তিন প্রভাবশালী মন্ত্রী মোহা. নাসিম, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও বেসামরিক, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন যখন পর্যায়ক্রমে যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন ঘটে বিপত্তি।
১৫ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে