শনিবার, ১৮ জুন, ২০১৬, ১২:১৫:০২

রোজা রেখে বাহারি ইফতারি বানাচ্ছেন রেস্তোঁরা শেফরা

রোজা রেখে বাহারি ইফতারি বানাচ্ছেন রেস্তোঁরা শেফরা

নিউজ ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাসে ঢাকার অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে হরেক রকমের ইফতারের আয়োজন করা হয়। প্রতিদিন বহু মানুষ এসব অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে যাচ্ছেন। কিন্তু এসব রেস্টুরেন্টগুলোতে শেফ হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের অনেকেই রোজা পালন করেন। এমন অবস্থায় মুখে খাবারের স্বাদ যাচাই না করেই শেফরা কীভাবে স্বাদ বজায় রাখছেন?

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র একটি অভিজাত রেস্টুরেন্ট ‘ক্লাউড বিস্ট্রো’। এখানকার প্রধান শেফ সজিব মোহাম্মদ। তিনি বলছেন, সবসময় খাবারের স্বাদ একই রকম বজায় রাখার জন্য তিনি রেসিপি কার্ড ব্যবহার করেন।

কোন ধরনের খাবারে কী পরিমাণ রান্নার উপাদান ব্যবহার করতে হবে সেটি এই কার্ডে উল্লেখ থাকে। এই রেসিপি কার্ড অনুসরণ করেই শেফরা খাবার তৈরি করেন বলে তিনি জানান।

সজিব বলেন, “কমার্শিয়াল রেস্টুরেন্টগুলো সবসময় এই রেসিপি কার্ড ফলো করে। খাবারটি কিভাবে তৈরি করতে হবে সেটি এই রেসিপি কার্ডে উল্লেখ থাকে।”

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়ায় ঢাকা শহরের অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে শেফরা মুসলমান। যেহেতু এদের মধ্যে অনেকেই রোজা রাখেন সেজন্য রেসিপি কার্ড থাকলে খাবার তৈরিতে সমস্যা হয় না বলে উল্লেখ করেন সজিব।

রমজানে ইফতারির সময় রেস্টুরেন্টগুলোকে তাদের খাবারের তালিকায় বাড়তি অনেক কিছুই যোগ করতে হয়, যেগুলো অন্য সময় থাকে না। এজন্য রেসিপি কার্ডের পাশাপাশি অনেক শেফ তাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান।

ঢাকার আরেকটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের শেফ ফারুক হোসেন বলেন কোন্ ধরনের খাবারে রান্নার উপকরণ কতটা প্রয়োজন সেটি তারা অনায়াসে আন্দাজ করতে পারেন। সেজন্য মুখে খাবারের স্বাদ পরীক্ষা না করলেও চলে। কিন্তু তারপরেও অন্যকে দিয়ে যাচাই করিয়ে নেয়া হয়।

হোসেন বলেন, “আমাদের আশে-পাশে কেউ যদি রোজা না থাকে, তাদেরকে দিয়ে আমরা খাবার টেস্ট করিয়ে নিই। মনের ভুল দূর করার জন্য এটা করি।” তিনি বলেন রোজা রেখে খাবার তৈরি করলেও স্বাদের তারতম্য নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।

ঢাকার কোন কোন রেস্টুরেন্টে এখন বিভিন্ন ধর্মের লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। রমজানে খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করা তাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হয়ে উঠে।

ধানমন্ডির আরেকটি রেস্টুরেন্টের শেফ লাবলু শেখ বলেন, “আমার যতটুকু আইডিয়া আছে, ততটুকু আমি ইউজ (ব্যবহার) করি। আমার যারা কলিগ আছে তাদের দিয়ে আমি টেস্ট করাই। হয়তো বা সে অন্য ধর্মের লোক –খ্রিস্টান বা হিন্দু।”

‘ক্লাউড বিস্ট্রো’ রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ সজিব মোহাম্মদ মনে করেন বিভিন্ন ধর্মের মানুষ থাকলে রেস্টুরেন্ট পরিচালনায় সুবিধা পাওয়া যায়।

সজিব বলেন , “ঈদের সময় ম্যাক্সিমাম লোককে আমার ছুটি দিতে হয়। তখন আমি কী করবো? ঈদের সময় খ্রিস্টান, হিন্দু বা বৌদ্ধ যারা আছে তারা যদি কাজ করে তাহলে আমি সেটা কাভার করতে পারবো।”

বিভিন্ন অভিজাত রেস্টুরেন্টের শেফরা বলছেন, রমজানে ইফতারের সময় খাবারের স্বাদ যাতে তারতম্য না হয় সেটি যথেষ্ট জরুরি। কারণ রমজান মাসে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোতে যা বিক্রি হয় তার ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে ইফতারকে কেন্দ্র করেই। -বিবিসি
১৮ জুন ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে