চট্টগ্রাম : এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর খুনিরা ছিল ভাড়াটে। তারা জানতো না কাকে তারা খুন করতে এসেছে। কিলিং মিশন শেষ করার পর টিভিতে খবর দেখে তারা মিতুর পরিচয় জানতে পারে। তখনই সবাই যোগাযোগ বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়।
চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হারুন-অর রশীদের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন আসামি মোতালেব ওরফে ওয়াসিম (২৮) ও আনোয়ার।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জবানবন্দি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন অনেক তথ্যই জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আবু মুছা নামে এক ব্যক্তির নির্দেশেই ভাড়াটে কিলার হিসেবে ৭ সদস্যের কিলিং স্কোয়াড মিতু হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছেন দু’জনেই। তবে খুনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাদের কিছুই জানা ছিল না।
জবানবন্দিতে ওয়াসিম জানান, এ হত্যা মিশনে অংশ নেয়া সাত সদস্যের টিম নেতা আবু মুছা। তিনি নিজেকে পুলিশের বড় সোর্স বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। মুছাই নির্দেশদাতা, মুছাই মিতুকে গুলি করেন। পুরো মিশন তদারকি করেন মুছা।
ওয়াসিম জানান, ঘটনার আগের রাতে ৭ জন মুছার বাসায় মিটিং করে। হত্যার মিশন বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেন মুছা।
তবে ওয়াসিম ও আনোয়ার এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীর নাম জানায়নি। মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে হত্যা মিশনে ভাড়া করা হলেও খুনের পর দুই-তিন হাজার টাকার বেশি দেয়নি।
তারা জানান, হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে মুছার মাধ্যমে ভোলা নামে একজন তাদের একটি রিভলবার ও একটি পিস্তল সরবরাহ করে। এ দুটি অস্ত্র ওয়াসিম ও আনোয়ার গ্রহণ করে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন রাতে। তবে ভোলা ঘটনাস্থলে ওইদিন ছিলেন না।
জবানবন্দিতে আনোয়ার জানান, হত্যাকাণ্ডের পর টিভিতে যখন জানতে পারি, ওই নারী এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী। তখন তারা ভয়ে মুছাকে ফোন করেন। এসময় মুছা নিজেকে এক বড় পুলিশ কর্মকর্তার সোর্স বলে দাবি করেন।
তাদের হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেন তিনি। এরপর তারা উভয়ে (ওয়াসিম-আনোয়ার) জামা-কাপড় পাল্টে আত্মগোপনে চলে যান। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও বন্ধ রাখেন।
এদিকে স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকে সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় শ্বশুরবাড়িতে রয়েছেন এসপি বাবুল আক্তার। সেখানে সর্বক্ষণ উপস্থিত থাকছেন পুলিশের ছয়জন সদস্য।
তবে এই পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা নিচ্ছেন নাকি জামাতার ওপর নজরদারি চালাচ্ছেন তা নিয়ে ধন্দে আছেন বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন- এমনটাই জানা গেছে গণমাধ্যমসেূত্রে।
২৭ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম