নিউজ ডেস্ক : দলের ভিতর জামায়াত-বিএনপির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবার পদক্ষেপ নিয়েছে রাজশাহী আওয়ামী লীগ। সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর এবং যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় দেশে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাশাপাশি সরকার উৎখাতে নাশকতায় লিপ্তদের যোগদান না করানোর বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ধরনের চিঠি রাজশাহীর ৯ উপজেলা ও ১৪ পৌর কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। অন্য দল বা সংগঠন থেকে আওয়ামী লীগে কোনো ব্যক্তি যোগ দিতে চাইলে তার জন্য কিছু শর্তারোপ করা হয়।
এ নির্দেশের বাইরে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আওয়ামী লীগে যোগদান করানো হলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কমিটি বা নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অথবা সরকার উৎখাতের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিভিন্ন মামলার আসামি তাদের কোনো অবস্থায় আওয়ামী লীগে বা সহযোগী সংগঠনে যোগদান করানো যাবে না।
এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য দেশে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত হয়ে বিভিন্ন মামলার আসামিদের সংগঠনে নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তিনি আরও জানান, অনেক পরিশ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করা হয়েছে।
তারা বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে সফলতার পরিচয় দিয়েছে। এসব সফলতা দেশের মানুষ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অনুপ্রবেশকারী অংশটি জামায়াত-বিএনপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে সরকার তথা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে। ম্লান করে দিতে চাইছে সরকারের সব সফলতা।
জেলা আওয়ামী লীগের বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা বা সদস্য আওয়ামী লীগে যোগদানের ব্যাপারে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে- যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অথবা সরকার উৎখাতের সঙ্গে জড়িত হয়ে বিভিন্ন মামলার আসামি তাদেরকে কোনো অবস্থায় আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে বা সহযোগী সংগঠনে যোগদান করানো যাবে না। যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য দেশে তথা রাজশাহীতে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত হয়ে বিভিন্ন মামলার আসামি তাদের সংগঠনে নেওয়া যাবে না।
তবে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলোতে যোগদানের ব্যাপারেও কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সমাজে যারা গ্রহণযোগ্য, সৎ, নিষ্ঠাবান ব্যক্তি তারা আওয়ামী লীগে যোগদানের ইচ্ছা পোষণ করলে তিনি যে ইউনিয়নের বাসিন্দা সেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কাছে আবেদন করবেন।
তাই আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের স্থান দেয়া যাবে না। কৌশল করে যারা দলে অনুপ্রবেশ করতে চাইছে, তাদের ঠেকাতেই কেন্দ্রীয় নির্দেশে জেলা আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ ধরনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, আমরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। বিষয়টি আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতকর্মীরা ভালোভাবে দেখছেন না।
তিনি বলেন, যোগদানের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি এ ধরনের সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানাই।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আওয়ামী লীগ ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন। এ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অনেক পরিশ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করেছেন। তাই আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদীদের স্থান নেই। কৌশল করে যারা দলে অনুপ্রবেশ করতে চাইছে, তাদের ঠেকাতেই কেন্দ্রীয় নির্দেশেই জেলা আওয়ামী লীগ এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে