ঢাকা : রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক লাগোয়া একটি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে এক লোক ডাকছেন, আসুন রোজাদার ভাইয়েরা, ইফতার করে যান, ইফতারের ব্যবস্থা আছে, ইফতার করে যান।
ওই ব্যক্তির ডাকে সাড়া দিয়ে রাস্তার পাশের ভবনের সামনে একটি খোলা জায়গায় রিকশাগুলো রেখে চালকরা ওই ভবনের দিকে যাচ্ছেন। এরপর যতগুলো রিকশা আসছে, তার চালকরাও রিকশা রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন।
বিজয়নগর পানির ট্যাংকের পাশে টেপা কমপ্লেক্সের নিচ তলায় সামনের খোলা জায়গায় এবং সিঁড়িতে প্লাস্টিকের কারপেটে (জায়নামাজ) শতাধিক লোক সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন।
কেউ টুপি পরা, আবার কারো মাথায় গামছা বাঁধা। তাদের সামনে রাখা আছে একটি মেলামাইনের প্লেট এবং একটি মেলামাইনের গ্লাস। প্লেটে রাখা হয়েছে খেজুর, শশা, আনারস, পিঁয়াজু, বেগুনি, জিলাপি আর গ্লাসে লেবুর শরবত।
বড় বড় দুই থেকে তিন প্লাস্টিকে বলের ভেতরে ছোলা, পুঁদিনা পাতা, পিঁয়াজু, আলুর চপ, পেঁয়াজ, সরিষ্যার তেল দিয়ে ছোলা মাখা হচ্ছে। ইফতারের ৫ মিনিট আগে ছোলার সঙ্গে মুড়ি মিশিয়ে প্রত্যেকের প্লেটে প্লেটে দিয়ে দিচ্ছেন তারা।
একজন হুজুর দোয়া-দরুদ পাঠ করছেন এবং ইফতারের আগ মুহূর্তে মিলাদ পড়ার পর দোয়া মোনাজাত করেন।
কোনো টাকা ছাড়াই প্রতিদিন কমপক্ষে দুশ' থেকে আড়াইশ' রোজাদারকে এভাবেই ডেকে ডেকে ইফতার করানো হয়। প্রতিদিনের এ ইফতারের আয়োজন করেন টেপা কমপ্লেক্সের মালিক আলহাজ সাইদুর রহমান টেপা।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শুধু এ বছরই নয়, প্রতি বছরের রমজানে রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। আমার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জেও মাসব্যাপী এ ধরনের আয়োজন থাকে।
আলহাজ সাইদুর রহমান টেপা বলেন, এখানে রিকশাচালকরাই শুধু নয়, পথচারী, প্রতিবন্ধীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ইফতারে শরিক হন।
টেপা কমপ্লেক্সের ছয়জন কর্মচারী বাবুল মোল্লা, কাজী সাজ্জাদুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মাসুম মোল্লা, আয়নাল এবং আকলিমা নিজেরাই যাবতীয় ইফতার সামগ্রী তৈরি করে থাকেন।
৩০ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম