নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁতে অস্ত্রধারীদের হামলার পর রেস্তোরাঁয় ঠিক কতোজন আটকা পড়েছেন তার কোন নিশ্চিত সংখ্যা জানা না গেলেও উৎকণ্ঠা নিয়ে বেশ কয়েকজন স্বজন উপস্থিত হয়েছেন ঘটনাস্থলে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া যায়।
এলিগেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান রুবা আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে অপেক্ষায় আছেন মেয়ে অবনিতা কবীরের (১৮) খোঁজে। দুই বান্ধবীকে নিয়ে অবনিতা এই রেস্তোরাঁয় আছেন বলে জানান তারা।
ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের নাতি ফাইয়াজও (২১) ওই রেস্তোরাঁয় আছেন বলে তার স্বজনরা জানান। ফাইয়াজের মা সিমিন হোসেন ওই এলাকায় রয়েছেন।
আফতাব গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার খানের ছেলে তাহমীদের (২২) খোঁজ জানতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন তার স্বজনরা। তারা জানান, তাহমীদ শুক্রবার কানাডা থেকে দেশে ফিরে ইফতার করে বন্ধুদের সঙ্গে ওই রেস্তোরাঁয় যান।
হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর কর্মচারী ইমাম হোসেন সবুজের অপেক্ষায় রয়েছেন তার বাবা আব্দুল খালেক। খালেক বলেন, তিনিও ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে পারেননি। মোবাইল ফোনে রিং বেজে যাচ্ছে, কিন্তু অপর প্রাপ্ত থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
২০ জনের মতো বিদেশি নাগরিকসহ ৪০ জনের মতো ‘জিম্মি’ আছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর পাওয়া গেছে। বিদেশিদের মধ্যে ‘সাত ইতালীয় থাকার’ তথ্য দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ঘটনাস্থল রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টের আশেপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই তারা অভিযান শুরু করবে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের সাঁজোয়াযান (এপিসি) দিয়ে ওই হোটেল ঘিরে ফেলা হয়েছে। এসময় এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ওই ব্যক্তি এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার নাকি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১.৩০ মিনিটের দিকে আইএসের কথিত সংবাদ সংস্থা আমাক নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ এ খবর দিয়েছে।
এদিকে, জিম্মিকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজেন রেস্টুরেন্টেতে সন্ত্রাসীরা বিদেশিসহ কমপক্ষে ২০জন নাগরিককে জিম্মি করে রেখেছে। রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকেই ৮-৯ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রথমে পুলিশের ওপর গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। হোটেলের আশপাশ এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। গুলশান ২ এর ৭৯ নম্বর রোডে ৫নং বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। পুলিশ ও র্যাবের বিশেষ ইউনিট হোটেল থেকে জিম্মিদের উদ্ধারের পরিকল্পনা করছে।
২ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি/এসএস