শনিবার, ০২ জুলাই, ২০১৬, ১০:৫১:০২

‌‘গুলশান হামলার রক্তাক্ত ছবি’ প্রকাশ করল আইএস

‌‘গুলশান হামলার রক্তাক্ত ছবি’ প্রকাশ করল আইএস

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর ‘গুলশানে সংঘটিত রক্তাক্ত হামলা’র ছবি প্রকাশ করার কথা জানিয়েছে। তবে কোনও বিশ্বস্ত সূত্র ছবিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেনি। আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সাইট ইন্টিলিজেন্স-এর খবরেও একই দাবি করা হয়েছে।

এদিকে বিবিসির একজন সাংবাদিক টম ডনকিন তার টুইটার পোস্টে জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টেটের মুখপাত্র হিসেবে সংবাদসংস্থা আমাক-ই এইসব ছবি প্রকাশ করছে। ছবিগুলো ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে #Amaq লিখে সার্চ দিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন টুইটার ব্যবহারকারী ওই #Amaq সহ ওইসব ছবি পোস্ট করেছেন। তবে বিভৎস আর ভয়াবহ সেইসব ছবি গুলশান হামলারই কিনা, কোনও সূত্রেই তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রেস্তোরাঁটিতে জিম্মি উদ্ধারে কমান্ডো অভিযান শেষ পর্যায়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, অভিযান শুরুর ৪৫ মিনিটের মধ্যে পুরো পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে।

র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থল থেকে জানান, ভেতরে পাঁচজন মারা গেছে। ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহত ও উদ্ধার করা ব্যক্তিদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উদ্ধার অভিযানের একপর্যায়ে ওই রেস্তোরাঁয় সাতটি অ্যাম্বুলেন্স নেওয়া হয়। সেগুলোতে অনেককে সরিয়ে আনা হয়।

এদিকে অভিযান শুরুর আগে আইএসের (ইসলামিক স্টেট) কথিত বার্তা সংস্থা আমাক নিউজ ওই রেস্তোরাঁর ভেতরে তাদের হাতে নিহত কয়েকজনের রক্তাক্ত ছবি প্রকাশ করে। আমাক নিউজের সেসব ছবি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ টুইটারে প্রকাশ করে অভিযান শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা আগে।

এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৭টার পরপর পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সোয়াত ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান শুরু হয়। অভিযান শুরুর পর মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা যায়।

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, সাড়ে ৭টার পরপর সোয়াতের একটি দল একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে ওই রেস্তোরাঁ দিকে এগোতে থাকে। এর পর পর কয়েক দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিত অভিযান শুরু করে।

তবে গতরাত থেকেই পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সোয়াত ও নৌ-বাহিনীর কমান্ডোদের সমন্বয়ে এ অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়। ভোর পাঁচটার দিকেই তাদের প্রস্তুতি শেষ হয়। পরে আশপাশে অবস্থান নেওয়া সংবাদকর্মীদের পুলিশ নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে দেয়। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ওই এলাকায় অবস্থান করছেন।

এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে গুলশানের ৭৯ নম্বরের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ৮ থেকে ১০ জন সশস্ত্র যুবক অতর্কিত হামলা চালায়।

এরপর তারা ওই রেস্তোরাঁয় থাকা লোকজনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২০ জন বিদেশি নাগরিকসহ ৩০-৩৫ জন আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর থেকে পুরো চার কিলোমিটার এলাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রাখে।

ওই রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার কিছুক্ষণ পর পুলিশের অগ্রগামী দলের দুই কর্মকর্তা জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় নিহত হন। আহত হন প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন। আহতদের মধ্যে ১৯ জন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

জঙ্গি হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তাদের দাবি অন্তত ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
০২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে