শনিবার, ০২ জুলাই, ২০১৬, ১২:৪৬:১৬

গুলশানে জঙ্গিদের নিষ্ঠুর তাণ্ডবের বর্ণনা দিলেন প্রাণে বেঁচে আসা সুপারভাইজার

গুলশানে জঙ্গিদের নিষ্ঠুর তাণ্ডবের বর্ণনা দিলেন প্রাণে বেঁচে আসা সুপারভাইজার

নিউজ ডেস্ক : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় যে ঘটনা ঘেটে গেল, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। এ ঘটনার খবর মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো বিশ্ব। বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টি ছিল ঢাকার গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয়।

এই আর্টিজান রেস্তোরাঁটি বিদেশি নাগরিকদের কাঝে অত্যন্ত প্রিয় একটি রোস্তরাঁ। এখানে প্রতিদিনই বিদেশিদের আনাগোনা থাকে চোখে পড়ার মত। পাশাপাশি দেশি লোকজনও যাতায়াত করেন। তবে উচ্চবিত্তরাই আসেন এখানে। আর এটিকেই টার্গেট করে কথিত জঙ্গিরা।

শুক্রবার শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে একদল অস্ত্রধারী গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁতে হামলা চালায়। তার এ রেস্তোরাঁর কর্মচারি, কর্মকর্তাসহ আগুন্তক সব অতিথিকে জিম্মি করে ফেলেন। এরপরই চলে তাণ্ডব। আর এ খবর যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখন পুরো বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেই বিরাজ করছিল একটা উৎকণ্ঠা। পরবর্তীতে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে সকালে কমোন্ডো বাহিনীর ৪৫ মিনিটের অভিযাণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

 গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর সুপারভাইজার হামলা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই দৌড়ে ছাদে চলে আসেন। তিনিসহ তার এক সহকর্মী ছাদ থেকে লাফিয়ে পাশের ভবনে পড়েন। কোনমতে তারা সেখান থেকে প্রাণে বেঁচে আসেন। প্রাণে বেঁচে আসার সেই সুপারভাইজার বলেছেন হামলা শুরুর ভয়াবহতার নিষ্ঠুর কথা।

সুপার ভাইজার বলেন, তখন রাত পৌনে ৯টা। হঠাৎই ৮-১০ জন যুবক ঢুকে পড়ল বেকারিতে। ওদের একজনের হাতে তলোয়ার। অন্যেরা সকলেই আগ্নেয়াস্ত্রধারী। ঢুকেই ওরা শূন্যে গুলি ছুড়ল। তারপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে শুরু করল। বেকারিতে তখন অন্তত ২০ জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন। তারা সকলেই টেবিলের নীচে আশ্রয় নেন।

তিনি বলেন, আমি হামলা শুরু হতেই ছাদে চলে আসি। সঙ্গে আমার এক সহকর্মী। তিনি ইতালির নাগরিক। হামলাকারীদের বোমায় তখন গোটা ভবনই কাঁপতে শুরু করেছে। অন্তত ১০-১২টি বিস্ফোরণ ঘটায় ওরা। মনে হচ্ছিল, ওরা সামনের দিক থেকেই বেকারিতে ঢুকেছিল। আমরা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পাশের এক ভবনে গিয়ে পড়ি। আমাদের এক কর্মী আর্জেন্টিনার নাগরিক। তার কোনও খোঁজ মিলছে না। অনেক কর্মী ভিতরে আটকে পড়েন। কিন্তু তাদের কাউকেই ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। ফোন করলে বেজে যাচ্ছে। তারা ফোন ধরছেনও না। কেটেও দিচ্ছেন না।

তিনি জানান, সাড়ে ১০টা নাগাদ আমি বাইরে যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছি তখনই ভিতরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন আহত পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে আনতে দেখা যায়।
২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে