ঢাকা : রাজধানীর গুলশানের আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় ভারতের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
খবর : এনডিটিভির
সুষমা স্বরাজ টুইট বার্তায় বলেন, আমি অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ঢাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি তারুশিকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, নিহত ওই তরুণীর নাম তারুশি জেইন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছুটি কাটাতে নিহত তরুণী ঢাকায় ছিলেন; যেখানে তার পিতা গার্মেন্টে ব্যবসা করেন।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ধারালো অস্ত্র নিয়ে আল্লাহু আকবার বলে স্লোগান দেয় হামলাকারীরা। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
শুক্রবার রাতেই জঙ্গিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ২০ জনকে হত্যা করে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গিদের হাতে জিম্মিদের উদ্ধারে অপারেশন ‘থান্ডারবোল্ট’ শুরুর আগেই ২০ জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে সেনা সদর দফতরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সেনা কর্মকর্তা নাইম আশরাফ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অপারেশন শেষে রেস্টুরেন্টটি থেকে মোট ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়জন সন্ত্রাসী নিহত ও একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নাইম আশরাফ চৌধুরী বলেন, সংবাদ পওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে সন্ত্রাসীদের যথেচ্ছ কর্মকাণ্ড থেকে নিভৃত করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব যে সাহসিকতা, আন্তরিকতা প্রদর্শন করেছে তা সত্যিই অনন্য। তাদের অভিযানকালে দুজন সাহসী পুলিশ অফিসার মৃত্যুবরণ করেন এবং ২০ জনের অধিক পুলিশ সদস্য আহত হন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আদেশ অনুযায়ী সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করা হয়। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব সম্মিলিতভাবে ‘অপরেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করা হয়।
কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু করে ১২-১৩ মিনিটের মধ্যে সকল সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে টার্গেট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে অভিযানের সফল সমাপ্তি ঘটে সকাল সাড়ে ৮টায়।
তিনি জানান, অভিযানের মাধ্যমে একজন জাপানি ও দুজন শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে সাতজন সন্ত্রাসীর মধ্যে ছয়জন নিহত ও একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযান শেষে তল্লাশিকালে ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের সবাইকে গত রাতেই হত্যা করা হয় এবং অধিকাংশকেই ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হয়।
মরদেহগুলো প্রচলিত নিয়ম মেনেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
২ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম