রবিবার, ০৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:১৪:৪৫

গুলাশানে হামলা: ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে সেদিন টয়লেটের পানি খেয়েছে বন্দীরা

গুলাশানে হামলা: ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে সেদিন টয়লেটের পানি খেয়েছে বন্দীরা

জাতীয় ডেস্ক:  গুলাশানে ৭৯ নাম্বার রোডে অবস্থিত হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার ঘটনাটি সবার মনে দাগ কেটেছে। সেদিন (শুক্রবার)রাত পৌনে ৯টার দিকে হামলা চালায় জঙ্গিরা। পরের দিন (শনিবার) সকালে অভিযান চালিয়ে ১৩জনকে জীবিত এবং ২০ মৃতদেহ উদ্ধার করে যৌথবাহিনী।

অভিযানের সময় ৬ হামলাকারী নিহত হন এবং একজনকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন এবং ডিবির সহকারি কমিশনার (এসি) রবিউল নিহত হয়েছেন।  

শনিবার সকালে সেনা কমান্ডোদের মূল অপারেশনে তাদের অক্ষত উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সমীর তার ভাই গোপালের মোবাইল ফোনে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এসএমএস দিয়ে নিজেদের সর্বশেষ অবস্থা জানান। মধ্যরাতে টয়লেট থেকে তারা কয়েক সহকর্মী একটি সেলফি তুলে তা ফেসবুকে আপলোড করেন।

পরিবারের কাছে ফিরে সমীর জিম্মি ঘটনার বিবরণ দেন। সমীর জানান, জঙ্গিরা শুরুতে অস্ত্রের মুখে তাদের নড়াচড়া নিষিদ্ধ করে। রাত ১১টার দিকে বিদেশি ও বাংলাদেশিদের আলাদা করে। তাদের স্থান হয় একটি টয়লেটে। বাইরে থেকে তাদের আটকে দেওয়া হয়। এর আধাঘণ্টা পরেই আবার দুই অস্ত্রধারী। জঙ্গি টয়লেটের দরজা খুলে বিদেশিদের খুঁজতে থাকে। না পেয়ে বলে, 'তোদের মারব না।'

এরপরও বিশ্বাস হচ্ছিল না সমীরের। সেনা কমান্ডোরা তাদের বের করার আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, এই বুঝি জঙ্গিরা তাদের গুলি করে মেরে ফেলল। জঙ্গিদের সবার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আর ছুরি ছিল বলে জানায় সমীর। তার ধারণা, ওই সময়েই বিদেশিদের মেরে ফেলা হয়। জঙ্গিদের বিবরণও দেন তিনি। বলেন, সবাই বয়সে তরুণ। কারও গায়ে জামা, কারও গায়ে টি-শার্ট। মনে হচ্ছিল বিদেশিদের ওপর তারা খুব ক্ষিপ্ত।

সমীরের সঙ্গে একই টয়লেটে আটক ছিল তার ভাগ্নে রিন্টুও। এই যুবক ক্যাফেটেরিয়ার পরিচ্ছন্নকর্মী। তিনি জানান, অস্ত্রের মুখে আটকে রাখার পর একবার শুধু জঙ্গিরা তাদের দরজা খুলে সবাইকে তল্লাশি করেছিল। মনে হচ্ছিল, তখনই মেরে ফেলবে। ক্ষুধার জ্বালা থাকলেও সারারাতে কিছু খেতে পারেননি। তাদের অনেকেই টয়লেটে ট্যাপের পানি খেয়েছেন।
৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে