সোমবার, ০৪ জুলাই, ২০১৬, ০৫:১৫:০৬

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ নিহতদের লাশ পাচ্ছেন স্বজনেরা

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ নিহতদের লাশ পাচ্ছেন স্বজনেরা

নিউজ ডেস্ক: গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নিহত ব্যক্তিদের লাশ পাওয়া নিয়ে স্বজনদের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। গত শনিবার সকালে অভিযান শেষ হলেও এখনো নিহত ব্যক্তিদের লাশ হাতে পাননি তাঁদের স্বজনেরা। তবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আজ সোমবার সকাল ১০টায় আর্মি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। আইএসপিআরের পরিচালক লে. কর্নেল রাশিদুল হাসান জানিয়েছেন, আর্মি স্টেডিয়ামে মৃত ব্যক্তিদের কফিনে প্রধানমন্ত্রী ফুল দেবেন। নীরবতা পালন ও মোনাজাতের পর সীমিত সময়ের জন্য সাধারণ মানুষ নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের সুযোগ পাবেন।


মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর গতকাল রোববারই হস্তান্তর করা হবে এই আশায় স্বজনেরা সকাল থেকেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) অপেক্ষা করতে শুরু করেন। পরে সিএমএইচ থেকে তাঁদের আজ সকাল ১০টায় আর্মি স্টেডিয়ামে আসতে অনুরোধ জানানো হয়।

এলিগ্যান্ট গ্রুপের কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন বলেন, গুলশানে জঙ্গি হামলার পর এলিগ্যান্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান রুবা আহমেদ নিজেই একমাত্র মেয়ে অবিন্তা কবীরের লাশ শনাক্ত করেন। গোটা পরিবারে অবিন্তাই একমাত্র মেয়ে। অবিন্তার বাবা এহসান কবীর এখন ঢাকার পথে। সিএমএইচে গতকালও মা রুবা আহমেদ আত্মীয়স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন মেয়ের লাশের জন্য। নিহত ইশরাত আখন্দের ভাই মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ অপেক্ষা করছেন ছোট বোনের লাশের জন্য। অপেক্ষা করছেন ফারাজ আইয়াজ হোসেনের স্বজনেরাও। ইউসুফ আখন্দ বলেন, তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে তাঁরা খবর পেয়েছেন, আজ সকাল ১০টায় মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।


জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা গতকাল সিএমএইচে ছিলেন। হামলায় নিহত সাত জাপানির স্বজনদের নিয়ে বিশেষ একটি ফ্লাইট গতকাল রাতেই ঢাকায় পৌঁছেছে। হামলায় নিহত ৩২ বছর বয়সী মাকোতো ওকামুরার বাবা কোমাকিচি ওকামুরাকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস গতকাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোমাকিচি ওকামুরা বলেন, ‘এই কষ্ট অসহনীয়। আমার ছেলে যখন বাংলাদেশে যাচ্ছে ওকে শুধু বলেছিলাম সাবধানে থেকো। এই শেষ কথা।’ ইতালির নয়জন নাগরিকের ছয়জনই স্টুডিওটেক্স লিমিটেডের। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মো. নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, ইতালির নাগরিকদের লাশ দেশে ফিরিয়ে নিতে একটি বিশেষ বিমান পাঠানো হয়েছে। ইতালীয় দূতাবাস থেকে সবাইকে সকাল আটটার মধ্যে আর্মি স্টেডিয়ামে যেতে বলা হয়েছে। লাশ হস্তান্তরের পর দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে মৃতদেহগুলো দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা রয়েছে।


মৃত ব্যক্তিদের ১০ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ: সিএমএইচে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একটি দল। ওই দলের সদস্য সোহেল মাহমুদ বলেন, মৃতদেহগুলোয় বুলেট, গ্রেনেডের স্প্লিন্টার ও কোপ ছিল। নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বেশি। তাঁদের খুব কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপের আঘাত থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। মৃত নারীদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি, একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক, একজন ভারতীয়, পাঁচজন ইতালীয় ও দুজন জাপানি।-প্রথম আলো

৪ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে