মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০১৬, ০১:৪২:২৬

‘কিভাবে আমরা মোবাশ্বেরের জানাজার আয়োজন করবো?’

‘কিভাবে আমরা মোবাশ্বেরের জানাজার আয়োজন করবো?’

নিউজ ডেস্ক : পুরো দেশ যখন ঢাকার ক্যাফে হামলার হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে ব্যস্ত তখন ঘাতক মির সামিহ মোবাশ্বেরের পরিবারের জন্য পরিস্থিতি পুরোটাই অন্যরকম। তার পিতা মির হায়াত কবিরের জন্য এটা দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই না। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি নিজেকেই প্রশ্ন করলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কিভাবে আমরা জানাজার আয়োজন করবো? কেই বা আসবে?’

শোকস্তব্ধ মির হায়াত কবির বলেন, ‘ছেলের হয়ে পুরো বিশ্বের কাছে আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে।’ সাক্ষাতকারের সময় বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। রোববার পুলিশ তাকে ফোন করে। তাকে সামরিক হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার ১৮ বছরের ছেলের লাশ শনাক্ত করার কথা বলা হয়। মি. কবির বলেন, মর্গে যাওয়াটা ছিল অত্যন্ত কষ্টের। ২৯ শে ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ মোবাশ্বের। তার এ- লেভেল পরীক্ষা ছিল আসন্ন। কোচিং সেন্টারে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়েছিল সে। তখন থেকে তার পরিবার মোবাশ্বেরের খোঁজ করে বেড়াচ্ছে।

সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার পরিবার ছেলের গায়েব হয়ে যাওয়া নিয়ে অন্য সম্ভাবনা নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন: হয়তো তাকে ইসলামপন্থীরা রিক্রুট করেছে। শনিবার তার পরিবার জানতে পারে তাদের দুঃস্বপ্নই সত্যি হয়েছে। স্বজনেরা মোবাশ্বিরের পরিবারকে একটি ছবি দেখায় যেটা আইসিস অনলাইনে প্রকাশ করে। বলা হয়, ঢাকার হলি আর্টিসান বেকারিতে নৃশংস হামলায় একজন হামলাকারী সে।

কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে মি. কবির বলেন, ‘এটা আমার ছেলে না, আমার ছেলে না। সে ছিল পূর্ণ মানবিকতাসম্পন্ন।’ তিনি বলেন ১৮ বছর বয়সী তার ছেলে ছিল সহজ সরল। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, কোন টিনেজ এমনটা হয় না। এ ছাড়া তেমন খুব বেশি চিহ্ন স্পষ্ট ছিল না। মুবাশ্বের তার এ-লেভেল পরীক্ষার জন্য ৬ মাস পড়াশোনা করেছে। কিন্তু তাদের চোখে একটি পরিবর্তনই ধরা পড়েছে। তা হলো সে ছবি আঁকা বন্ধ করে দিয়েছিল। ধর্মের প্রতি সব সময়ই তার আগ্রহ ছিল। ধর্মের প্রতি তার এই আগ্রহকে তার পরিবার অনুৎসাহিত করেনি।

কিন্তু তার পিতা বলেছেন, তিনি তার ছেলেকে বলেছিলেন, যদি সে এর চেয়েও বেশি কিছু জানতে চায় তাহলে তাকে সরাসরি পবিত্র কুরআন পড়া উচিত। এমনকি তিনি মুবাশ্বেরকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা একটি পবিত্র কুরআন দিয়েছিলেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছেন, মসজিদে বা স্কুলে যেসব মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাত হয়েছে তারাই হয়তো মোবাশ্বেরকে উগ্রপন্থি বানিয়েছে। কবির বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ইসলামপন্থি কিছু গ্রুপ তাকে তাদের দলে টেনেছিল এবং তার ব্রেনওয়াশ করেছে। আমি বলতে পারি আমার ছেলে বাস্তবেই মানবিক গুণসম্পন্ন। এমন গুনসম্পন্ন মানুষ এত নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে না।  এমজমিন
৫ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে