ঢাকা : দিন দিন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। ফেসবুক ব্যবহারে অনেকেই হয়তো অসচেতন থাকেন। অসচেতনতার কারণে নিজের অজান্তেই নিজেকে অনিরাপদ করে তুলছে।
লোকেশন ট্যাগসহ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ছবি পোস্ট করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যাদি অপরাধীদের কাছে সহজলভ্য করে দিচ্ছে।
এ কারণে কিছু বিষয় ফেসবুকে শেয়ার না করার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে আশা করছে পুলিশ।
ফেসবুকে যে ৮টি বিষয় পুলিশের তরফে শেয়ার না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে তা হলো-
১. জন্ম তারিখ
অনেকেই নিজের জন্ম তারিখ ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন। এটি আপনার জন্য নিরাপদ নয়। কারণ তথ্য প্রযুক্তির যুগে জন্ম তারিখ থেকেই অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে পারে হ্যাকারা। যেকোনো শত্রু এই বিশেষ দিনে টার্গেট করে আপনার ওপর হামলা চালাতে পারে। তাই ফেসবুকে জন্ম তারিখ উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
২. শিশু কোথায় পড়াশোনা করে
গত কয়েক বছরের যৌন ও শিশু বিষয়ক অপরাধগুলো গবেষণা করে ইংল্যান্ডের শিশু বিষয়ক সংস্থা এনএসপিসিসি জানায়, অধিকাংশ অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অসচেতন ছিলেন। এজন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো ঘটেছে।
অথচ অনেক অভিভাবক শিশুদের নিয়ে অবেগাপ্লুত হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে থাকেন। স্ট্যাটাসে জানিয়ে দেন, তার শিশু কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে। এটি শিশুর জন্য কিন্তু নিরাপদ নয়। এতে শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
৩. শিশুর ছবি
অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, শিশুদের নিয়ে যেকোনো তথ্য পাবলিকের কাছে শেয়ার করার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। যদিও অনেকেই শিশুদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে। শত্রুরা আপনার শিশুর ছবি সংগ্রহে রেখে সুযোগ বুঝে শিশুটিকে অপহরণ করতে পারে।
৪. বর্তমান অবস্থান
যেখানে সেখানে সেলফি তুলে লোকেশন ট্যাগ করে দেয়াটা নিরাপদ নয়। এর মাধ্যমে যে কেউ আপনার সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারে। এতে নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়ে। আপনার অবস্থান জেনেই শত্রুপক্ষ আপনার ওপর হামলা চালাতে পারে।
৫. কখন এবং কোথায় যাচ্ছেন
আপনি কখন, কোথায় যাচ্ছেন কিংবা ভ্রমণে বের হচ্ছেন সে বিষয়টি ফেসবুকে জানিয়ে দেন, যা মোটেও নিরাপদ নয়। বিষয়গুলো জেনে আপনার প্রতিপক্ষ ক্ষতি করতে পারে। হয়তো শত্রুপক্ষ আপনার এমন তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। ফেসবুকে এসব বিষয়ের জানান দেয়া মোটেও ঠিক না।
৬. নির্দিষ্ট স্থান ট্যাগ করা
অনেক সময় ফেসবুকে নিজের অবস্থানের নির্দিষ্ট স্থান ট্যাগ করে দেন অনেকেই। ওই সময় আপনার প্রোফাইল যে ভিজিট করবে, সে জানতে পারবে আপনি এখন কোথায় আছেন। কেউ আপনার বাসা ও অফিসের ঠিকানা সংগ্রহ করে পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে আপনার ক্ষতি করতে পারে। এ জন্য ফেসবুকে লোকেশন ট্যাগ করা মোটেও নিরাপদ নয়।
৭. ফোন বা মোবাইল নম্বর
অনেকেই মোবাইল কিংবা ফোন নাম্বার ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন, যা একেবারেই নিরাপদ নয়। শত্রুপক্ষ আপনার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সুযোগ বুঝে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি যে কেউ আপনার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সময়ে অসময়ে বিরক্ত করতে পারে। মোবাইল বা ফোন নম্বর ব্যক্তিগত গোপনীয় জিনিস। নিজের পরিচিত ছাড়া কাউকে ফোন কিংবা মোবাইল নম্বর দেয়া নিরাপদ নয়।
৮. ক্রেডিট কার্ডের তথ্য
ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে গোপন ও স্পর্শকাতর বিষয়। ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। অবশ্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেয়ার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কিংবা ওয়েবসাইট বুঝেই দিতে হবে। আপনার দেয়া তথ্য যাতে তাদের কাছে সুরক্ষিত থাকে।
এসব বিষয়ে সচেতন হোন এবং অপরকে সচেতন হতে সহায়তা করুন।
তথ্যসূত্র : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ফেসবুক পেজ
১৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম