ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জি এম জিলানী শুভ বলেছেন, ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা আজ ভর্তি-বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনিতো সোনার ছেলেদের কিছু বলতেও পারবেন না।
তিনি বলেন, আপনি অনেক কিছুর নাম পরিবর্তন করেছেন। বিডিআর বিদ্রোহের পর নাম পরিবর্তন করে বিজিবি করেছেন। তেমনিভাবে ছাত্রলীগের নাম পরিবর্তন করে ‘বাণিজ্যলীগ’ রাখুন।
ছাত্রলীগ কর্তৃক একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাণিজ্য চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে বাণিজ্যিকীকরণ করে সেই বাণিজ্যে ছাত্রলীগকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংগঠনের উদ্যোগে ‘দেশে ছাত্রলীগের চলমান ভর্তি-বাণিজ্য বন্ধে’র প্রতিবাদে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
জি এম জিলানী বলেন, অভিভাবকদের বলা হচ্ছে নিজেদের ছেলেদের খোঁজ-খবর নিতে। তাহলে ছাত্রলীগ যে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য শুরু করেছে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত মাসের ২২ তারিখে যখন ভর্তি শুরু হয় তখন প্রথম মেধাতালিকায় ভালোভাবেই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু দ্বিতীয় মেধাতালিকায় ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলে কলেজ থেকে ছাত্রলীগের নেতারা শত শত ফরম ছিনতাই করে নেয়। এই ফরম প্রকাশ্যে বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তি ২০ হাজার, মানবিকে ২৫ হাজার ও বাণিজ্যে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।
জিলানী বলেন, কবি নজরুল কলেজে গিয়ে আমাদের সহকর্মীরা দেখেন প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সব ফরম ছাত্রলীগের সভাপতি আর সেক্রেটারি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছে। সোহরাওয়ার্দী কলেজেও একই চিত্র।
ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি অনিক রায় বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন। সরকারের সব মন্ত্রী-এমপিরা যেখানেই কথা বলেন না কেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে বক্তৃতা শুরু করেন।
তিনি বলেন, আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই- ১৯৭১ সালে যে ছেলেটি পড়ালেখা ফেলে যুদ্ধে গিয়েছিল, সেই ছেলেটি বই খাতা ফেলে কেন হাতে বন্দুক তুলে নিয়েছিল? পাকিস্তানীরা আমাদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিল বলেই। শিক্ষা নিয়ে তারা বাণিজ্য করতে চেয়েছিল।
অনিক রায় বলেন, আজ ২০১৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সরকার সেই একই কায়দায় শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য শুরু করেছে। অবিলম্বে এ বাণিজ্য বন্ধের পদক্ষেপ নিন। তা না হলে ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে সাধারণ ছাত্রদের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
যে ধরনের অনিয়ম ঘটছে সেসব কলেজের আমলা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচির পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইউনিয়ন নেতারা।
ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অনিক রায়ের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সেন গুপ্ত, ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কে এম রাব্বি ও লালবাগ থানা সভাপতি রকনুজ্জামান রতন প্রমুখ।
১৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম