বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬, ১১:৩১:১২

এবার যেখানে যেখানে হামলার হুমকি দিয়ে চিঠি

এবার যেখানে যেখানে হামলার হুমকি দিয়ে চিঠি

নিউজ ডেস্ক : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের হাজরাপাড়া কালীমন্দিরের পুরোহিত তপন চক্রবর্তী, সোমনাথ লাহেড়ী ও মোহনলাল চক্রবর্তীকে হত্যার হুমকি দিয়ে কে বা কারা একটি চিঠি দিয়েছে।  চিঠিতে আইএস ও জেএমবি পরিচয় দিয়ে ওই কালীমন্দিরের ভেতরে রেখে এসেছে তারা।

বিষয়টি পুরোহিত তপন চক্রবর্তী জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে অবহিত করেন।

বুধবার র‌্যাব-৬ এর কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট মো. জাহিদুল কবির সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  এ সময় খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোজাফ্ফার রহমান, পাটকেলঘাটার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. তরিকুল ইসলাম ও খলিষখালী ক্যাম্পের ইনচার্জ হায়াত মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

পরে তারা খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে মতবিনিময় করেন।  এসময় কর্মকর্তারা জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য সাহস দেন।  এলাকায় সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেয়ার জন্যও অনুরোধ করেন।

এদিকে জঙ্গী হামলা ও ধর্মীয় পুরহিতদের হত্যার ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ডাকযোগে হুমকি-সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

১৪ জুলাই বিকেলে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা কার্যালয়ের দরজায় দুটি চিঠি পাওয়া যায় বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়।

ওই চিঠি দুটির মধ্যে একটিতে প্রেরকের নামের স্থলে “এড; আবুল কালাম আজাদ, চকরিয়া আইনজীবী সমিতি, চকরিয়া কক্সবাজার” ও অপরটিতে “সুমন রাইকান, আইনজীবী সমিতি, কক্সবাজার” লিখা রয়েছে।

আইএস কর্তৃক ডাকযোগে প্রেরিত ওই চিঠি দুটিতে লেখা রয়েছে, কক্সবাজারে “সর্বপ্রথম ব্রাহ্মণ মন্দিরে হামলা চালাবে।  

এরপর শহরের প্রধান প্রধান মন্দির যথা- কালী বাড়ী, স্বরস্বতী বাড়ী, লোকনাথ সেবাশ্রম, অনুকূল চন্দ্রের আশ্রম, ইসকন মন্দির, কৃষ্ণানন্দধাম, রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম”।  

চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, “যতদিন পর্যন্ত হিন্দুরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে না, ততদিন পর্যন্ত এই জিহাদ চালিয়ে যাবে”।

“কক্সবাজারের সমস্ত মন্দিরের পুরহিত, বিভিন্ন পূজা কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের খুঁজে খুঁজে বের করে খুন করবে”।  “পারলে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।  অন্যথায় গলাকেটে হত্যা করবে।  

যতবড় প্রশাসন আসুক না কেন হত্যা অবশ্যই করবে। মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরে বহুবার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নাই।  এবার আর রেহাই নাই।

এ ব্যাপারে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, ১৪ জুলাই হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রার অনুষ্ঠান ছিল।  

সাড়ে ৫টায় ওই অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কক্সবাজার জেলা কার্যালয় লালদীঘির পাড়স্থ ব্রাহ্মণ মন্দিরে আসলে অফিসে দরজার নিচে দেখা যায় দুইটি ডাকযোগে প্রেরিত চিঠির খাম।

ওই খাম দুটির মধ্যে প্রেরকের নামের স্থলে “এড. আবুল কালাম আজাদ, চকরিয়া আইনজীবী সমিতি, চকরিয়া কক্সবাজার” ও অপরটিতে “সুমন রাইকান, আইনজীবী সমিতি, কক্সবাজার” লিখা রয়েছে।  ওই খাম দুটি খুলে দেখা যায়, ইসলামী স্টেট (আইএস) কর্তৃক প্রেরিত চিঠি।

নেতৃবৃন্দদ্বয় বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে চরম আতঙ্কে ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। চিঠির প্রেরকরা যেকোনো মুহূর্তে হামলা চলাতে পারে।  নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আজ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।

ওই চিঠি পাওয়ার খবরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অপারেশন অফিসার আবদুর রহিম ডায়েরি লিপিবদ্ধ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
১৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে