মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬, ০৫:৪১:৪৯

মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুকদের জন্য সুখবর

মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুকদের জন্য সুখবর

রাজীব আহাম্মদ: প্রায় সাত বছর ধরে মালয়েশিয়ায় বড় পরিসরে জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। অন্তত চারবার দিনক্ষণ ঘোষণা করেও কর্মী পাঠানো যায়নি। তবে এবার পূর্ব এশিয়ার ধনী এ দেশের দুয়ার বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য খুলতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত ১৩ জুলাই মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ বাংলাদেশসহ ১৫টি দেশকে কর্মী নিয়োগের 'সোর্স কান্ট্রি'র (উৎস দেশ) তালিকাভুক্ত করে।

এ কারণে দেশটির শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার আশা জেগেছে। জনশক্তি রফতানিকারকরা আশা করছেন, আগামী মাস থেকেই মালয়েশিয়ার বন্ধ দুয়ার খুলতে পারে। কয়েক বছরে একের পর এক ঘোষণা দিয়েও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো যায়নি। তাই এবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তাই আগাম মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, 'বাংলাদেশের পক্ষে যা যা করণীয় ছিল, সবই করা হয়েছে। এখন কর্মী নিয়োগের বিষয়টি মালয়েশিয়ার হাতে। তারা যখন বলবে, তখনই আমরা কর্মী পাঠাতে প্রস্তুত।'

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন 'বায়রা'র নবনির্বাচিত মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন বলেন, 'মালয়েশিয়া নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। বারবার আশা জাগলেও বাংলাদেশ থেকে বড় পরিসরে কর্মী পাঠানো যায়নি। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে মালয়েশিয়া। এ কারণে কিছুটা হলেও নিশ্চয়তা পাচ্ছি।' তিনি বলেন, গত ছয় মাসে মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি শ্রমিকের চাহিদা নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ না হলেও অন্তত দুই লাখ কর্মী নিতে হবে দেশটিকে।

জনশক্তি রফতানিকারকরা জানান, মালয়েশিয়া তাদের সোর্স কান্ট্রি থেকে সাধারণত বড় পরিসরে কর্মী নিয়োগ দেয়। তারা অন্যান্য দেশের কর্মীদের থেকে বেশি সুযোগ সুবিধা পান। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সহসাই এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে_ এমন আভাস দিয়েছেন দেশটি সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা।

বায়রা সভাপতি বেনজির আহমেদ বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ শুরু হবে বলে মনে করছেন তিনি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। তিন বছর পর ২০১২ সালে সরকারিভাবে (জিটুজি পদ্ধতি) কর্মী পাঠাতে দেশটির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। জনপ্রতি ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অভিবাসন ব্যয়ে বৃক্ষরোপণ খাতে পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ কর্মী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছরে গেছেন মাত্র ৯ হাজার।


জিটুজির ব্যর্থতায় গত বছরের জুনে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় (বিটুবি পদ্ধতি) কর্মী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর দুই মাস পর মালয়েশিয়ান প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরে ঘোষণা করা হয় বিটুবি নয়, জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো হবে। এ পদ্ধতিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি রিত্রুক্রটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাবে। সরকার জানায় মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ কর্মী পাঠানো হবে।

এ পদ্ধতিতে কর্মী নিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে এসে সমঝোতা স্মারক সই করেন মালয়েশিয়ান মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েম। চুক্তি স্বাক্ষরের পরদিনই মালয়েশিয়ান সরকার জানায়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকবে। আগে অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়া হবে। পরে চাহিদার ভিত্তিতে নতুন বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ করা হবে।-সমকাল

১৯ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে