বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬, ০৫:৩২:১৬

লাশ চাইলে যা দিতে হবে জঙ্গির বাবা-মাকে

লাশ চাইলে যা দিতে হবে জঙ্গির বাবা-মাকে

ঢাকা : রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নিহত জঙ্গিদের লাশ সন্তান দাবি করে কেউ নিতে চাইলে সে ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদেরও ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।  

সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়েই লাশ হস্তান্তর করতে চায় পুলিশ।  যদিও এখন পর্যন্ত জঙ্গিদের মরদেহ নিতে কেউ যোগাযোগ করেননি।

এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান।  বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান তিনি।

কমান্ডো অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গির লাশ বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) মর্গে আছে।  তারা হলো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, স্কলাসটিকার সাবেক ছাত্র মীর সামিহ মোবাশ্বের, মালয়েশিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিব্রাস ইসলাম, বগুড়ার বিগিগ্রাম ডিইউ সেন্ট্রাল ফাজিল মাদরাসার সাবেক ছাত্র খায়রুল ইসলাম পায়েল, বগুড়ার সরকারি আযিযুল হক কলেজের ছাত্র শফিকুল ইসলাম উজ্জল।

এছাড়া হলি আর্টিজানের কর্মচারী বলে পরিচিত সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের লাশও সিএমএইচে রয়েছে।

ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, যদি কেউ তাদের সন্তানদের নিতে যোগাযোগ না করে, সে ক্ষেত্রে মৃতদেহগুলো আরো কিছুদিন সিএমএইচে রাখা হবে। তবে কতদির রাখা হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি।

এদিকে গুলশানের হলি আর্টিজানের হামলাকারীরা নেশা জাতীয় কোনো ওষুধ সেবন করেছিলেন কি-না তা নিশ্চিত হতে নিহতদের রক্ত ও চুলের নমুনা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই (ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল সিএমএইচে যায়।

নমুনা সংগ্রহে যাওয়া প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ।

পরে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, গুলশানে নিহত ৬ জঙ্গির রক্ত ও চুলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।  রক্ত ও চুলের নমুনা সংগ্রহের জন্য বেশকিছু শর্তও দেয়া হয়েছে।  

সোহেল মাহমুদ বলেন, শর্তের মধ্যে নিহত প্রত্যেকের হার্টের কাছাকাছি থেকে ১০ মিলিলিটার, হাত-পা থেকে ১০ মিলিলিটার রক্ত নিতে হবে। এছাড়া মাথার সামনে থেকে ১০টি, পেছনে থেকে ১০টি, মাথার ডান ও বাম পাশ থেকে ১০টি করে চুল সংগ্রহ করতে হবে।

ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা নিহতদের বিভিন্ন রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলাম।  তারই প্রেক্ষিতে আদালত রাসায়নিক পরীক্ষার নির্দেশ দেয়।  যে পরীক্ষাগুলো দেশে করানো সম্ভব, সেগুলো দেশেই করবো।  আর যেগুলো দেশে করার ব্যবস্থা নেই সেগুলোর আলামত এফবিআইয়ের ল্যাবে পাঠানো হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে কমান্ডো অভিযানে মারা যায় এ পাঁচ জঙ্গি। ওইদিন দুপুরের পর তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত প্রত্যেক জঙ্গির বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া গেলেও তাদের কোনো স্বজনই এখন পর্যন্ত মরদেহ নিতে সিএমএইচ কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

ওইদিনের জঙ্গি হামলায় তিন বাংলাদেশিসহ ১৭ বিদেশি মারা যায়।  এদের মধ্যে ইতালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন ও ভারতের একজন রয়েছে।
২০ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে