বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬, ০৬:০২:০৪

নিখোঁজ ২৬২ জনের একজন জিলানী, যুদ্ধে সিরিয়ায় নিহত!

নিখোঁজ ২৬২ জনের একজন জিলানী, যুদ্ধে সিরিয়ায় নিহত!

নিউজ ডেস্ক : মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সরবরাহ করা ২৬২ নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকায় ২৬১তম নামটি জিলানী ওরফে আবু জিদালের।  তিনি সিরিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছেন বলে আইএসের পত্রিকা দাবিক এ দাবি করেছে।

বাঙালি আবু জান্দাল আল জিলানীর বাবা কর্নেল মশিউর বিডিআর বিদ্রোহে নিহত হন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

রাজধানীর গুলশান হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলায় জড়িত সন্দেহে এক তরুণীসহ চারজনের ছবি প্রকাশের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ২৬২ জন নিখোঁজের একটি তালিকা প্রকাশ করে র‌্যাব।

ওই তালিকায় জিলানীর নাম উল্লেখ আছে।  তালিকায় সারাদেশের নিখোঁজ ব্যক্তিদের ছবি, ঠিকানা ও সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বুধবার মধ্যরাতে র‌্যাবের ফেসবুক অফিসিয়াল পেজে এ তালিকাটি প্রকাশ করা হয়।  তালিকার ২৬১ নম্বরে থাকা জিলানী এরই মধ্যে সিরিয়ায় নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করেন এমন একটি গবেষক দল কিছুদিন আগে জিলানীকে চিহ্নিত করেন।  সেখানে দাবি করা হয়, জিলানী মিলিটারি ইন্সটিটিউশন অব সায়েন্স অ্যাণ্ড টেকনোলজিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী ছিল।

জঙ্গি সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস)-এর হয়ে যুদ্ধ করতে এরই মধ্যে সিরিয়া ও ইরাকে গেছেন ১৩ বাংলাদেশি।  তাদের মধ্যে ডেসকোর কর্মকর্তা, এমআইএসটির সাবেক ছাত্র, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এবং চিকিৎসকও রয়েছেন।

বাংলাদেশে আইএস নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ করতে গিয়ে গতবছর একটি গোয়েন্দা সংস্থা এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পেরেছে।

দাবিকের ১৪৩৭ রজব এর ১৪তম ইস্যুতে দাবি করা হয়, জিলানী বাংলাদেশ সেনা কর্মকর্তার সন্তান, যিনি বিডিআর বিদ্রোহের সময় নিহত হয়েছেন।  

এতে বলা হচ্ছে, জিলানী তার তরুণ বয়সের শেষ সময়ে আসল ইসলামী ডাক পান, যখন তিনি শায়েখ আনোয়ার আল আওলাকির বক্তৃতা শুনতেন।  যখন সিরিয়ায় খলিফা ঘোষণা দেয়া হয়, সেই শুরুর সময়েই জিলানী তাওহিদ ও খলিফার বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার কাজ করতে শুরু করে।

দাবিকের মতে, জিলানী যখন দেশ ছাড়তে চায়, তখন সে মধ্যপ্রাচ্যে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কনফারেন্সের নাম করে যাওয়ার পথ নিশ্চিত করতে চেয়ে বাধার সম্মুখীন হয়।  সে এরই মধ্যে কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।  পরবর্তীতে একটি রেফারেন্স লেটার ও অর্থ সংগ্রহ করতে সমর্থ হন এবং সিরিয়ার পথে যাত্রা করেন।

র‌্যাবের তালিকায় জিলানীর নাম

দাবিকের প্রতিবেদন বলা হয়, যখন তার পরিবার জানতে পারে জিলানী মধ্যপ্রাচ্যে কোনো সম্মেলনে যোগ দিতে যায়নি, তখন বাংলাদেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত তার মামা জিলানীর সিরিয়া প্রবেশ না করার বিষয়ে অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।  ।সিরিয়ায় বাঙালি যোদ্ধাদের মধ্যে সে সবচেয়ে ছোট ছিল।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ এরই মধ্যে গণমাধ্যমকে বলেছেন, নিখোঁজদের অনেকেই জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে।  

সূত্র মতে, বাংলাদেশ থেকে যারা ইরাক ও সিরিয়া গেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেসকোর কর্মকর্তা সোহান, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার নজিবুল্লাহ আনসারী, এমআইএসটির সাবেক ছাত্র জিলানী।  খিলগাঁওয়ের একজন চিকিৎসক সপরিবারে সিরিয়ায় পাড়ি জমান বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।

রাজধানীর গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর নিখোঁজ সন্তানদের নিয়ে পরিবারের টনক নড়ে।  নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  কারণ হামলাকারীরা দীর্ঘদিন ধরেই বাইরে গিয়ে নিখোঁজ ছিল।

এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের বিষয়ে পরিবারকে জানাতে অনুরোধ করে র‌্যাব ও পুলিশ।  অনুরোধের পর সারাদেশে বিভিন্ন পরিবার তাদের নিখোঁজ সদস্যদের কথা উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় জিডি করে।
২০ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে