বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬, ১১:২০:৫৯

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দয়া করে সরকারি খুৎবা বন্ধ করুন : কাদের সিদ্দিকী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দয়া করে সরকারি খুৎবা বন্ধ করুন : কাদের সিদ্দিকী

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

১৯ জুলাই মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবার কালিহাতী উপনির্বাচনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। কবে হবে জানি না। তবে সহসা এর একটা এসপার ওসপার হওয়া দরকার।  কারণ এভাবে ঝুলিয়ে রাখায় সরকার এবং বিচার বিভাগ দুদিকেরই ক্ষতি।  

আমি একজন আইনবিদের ছেলে।  জীবনে অনেকবার শুনেছি, হাকিম নড়ে তবু হুকুম নড়ে না। কিন্তু এ নিয়ে চার-পাঁচবার সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি কোর্টে বসে মামলাটি নিষ্পত্তির তারিখ দিলেন কিন্তু কিছুই হলো না।

প্রথম পাঠিয়েছিলেন হাইকোর্টের এক বেঞ্চে। আমরা ভেবেছিলাম মাননীয় প্রধান বিচারপতির নির্দেশ মতো মামলাটি আপনা আপনি নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু হয়নি। সে সময় অবৈধভাবে নির্বাচন কমিশন আপিল করেছিল। এখন চলছে আমাদের আপিল।

যার তারিখ ছিল ১৯ জুলাই। যে রায় হবে, আমি সেটাই মেনে নেবো। কারণ এ দেশের জন্য, দেশের আইন-আদালতের জন্য আমি আমার অনেক রক্ত ও ঘাম ঝরিয়েছি। তাই কোনো কারণে আইন আদালত ছোট হোক সেটা কিছুতেই মেনে নেবো না।

আইন-আদালতের মর্যাদা রক্ষায় আমার জীবন গেলেও আপত্তি নেই। কিন্তু আমি ভাবছি আমাকে কতল করতে গিয়ে যেন দেশের ক্ষতি না হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের যেন বারোটা না বাজে। সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থার ঋণ পুনঃতফসিল ব্যাংক সব আইনকানুন বিচার-বিবেচনা করে সব শর্ত পূরণ করে করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে ডাটাবেজ থেকে নাম বাদ দিয়ে সংস্থাটিকে বিশ্রেণীকৃত করা হয়।

তারপর একটা উপনির্বাচনের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে খারাপ কিছু করার চেষ্টা করে থাকেন সে দোষ তো আর আমাদের নয়। অন্যদের বিনাসুদে ২৫-৩০ বছরের সুবিধা দেয়া হয়েছে।

সোনার বাংলাকে সর্বোচ্চ সুদে দেয়া হয়েছে ১০ বছর। সোনার বাংলা যদি অন্য ব্যাংকের সাথে লেনদেন করতে না পারে, পরিচালক হিসেবে আমি যদি ১০ বছর নির্বাচন করতে না পারি, তাহলে সুবিধা কোথায়? অসুবিধাই তো বেশি। নিশ্চয়ই স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে বিচারকেরা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে দয়া করে মুক্তিযোদ্ধাদের ’৭৫-এর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামীদের সর্বোপরি দেশবাসীর প্রতি বিরূপ হবেন না।  চাটুকারের কারণে দেশকে ধ্বংস হতে দেবেন না। স্বেচ্ছামৃত্যু মুসলমানের জন্য সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ, না হলে গত শুক্রবার জুমার নামাজে যে খুৎবা শুনেছি, একজন মুসলমান হিসেবে তার আগেই মরে গেলে ভালো ছিল।

বায়তুল মোকারমের খুৎবা শুনিনি, শুনেছি এক সাধারণ মসজিদের। তবে জেনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কল্যাণে সারা দেশে একই খুৎবা হয়েছে। এখন থেকে নাকি জুমার নামাজে সরকারি খুৎবা হবে। কী বলব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনি অবশ্যই এখন একজন অসাধারণ শক্তিশালী নেতা। আপনি ভালো করেই জানেন দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত বা জাতীয় পার্টি করতে মসজিদে যায় না।

জুমার নামাজ আদায় করে আল্লাহর নৈকট্য পেতে মসজিদে যায়। সে দিন রাজনীতি ছাড়া আর মসজিদে কিছু হয়নি। আপনি যদি মনে করেন অমন খুৎবায় দেশের বা আপনার সরকারের লাভ, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। যে যাই ভাবুন আমি যা বলছি আপনার রক্তের ভাই কামাল, জামাল, রাসেল বেঁচে থাকলে তারাও তাই বলত।

বঙ্গবন্ধু আমার প্রাণ, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনি আমার বোন। কিন্তু আপনাকে আমি মায়ের আসনে বিবেচনা করি। আপনি আমায় বহু বছর খুব কাছে থেকে দেখেছেন। মায়ের স্থান, পিতার স্থান সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর স্থান আমার হৃদয়ে কোথায় সেটা ভালো করেই জানেন। আমি পরম শত্রুকেও উলঙ্গভাবে গালাগাল করতে পারি না। সেটা আমার চরম দুর্বলতা।

বাজে শব্দ ব্যবহার করা আমার মা-বাবা শেখায়নি। স্ত্রী এবং ছেলে মেয়েরা খারাপ ভাববে বলে লেখার স্বার্থেও তেমন অনেক শব্দ ব্যবহার করি না। তাতে অনেক সময় লেখা দুর্বল হয়, প্রকৃত অর্থ ফোটে না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজিকে আপনার আগে থেকে চিনি।  ’৭৫-এ ঢাকার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের তালিকায় তার নাম ছিল। সিলেটের লুকু বলে একজনের ভাইকে মেরে ওরা পালিয়ে আমার ওখানে আশ্রয় নিয়েছিল। নসুর কাছ থেকে পরে ব্যাপারটা জেনেছি।

’৭৭ সালে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীকে পরাজিত করে শ্রী মোরারজি দেশাই প্রধানমন্ত্রী হলে আমাদের ওপর গজব নেমে আসে। তুরার চান্দভূই ক্যাম্প থেকে দুর্বলচেতা কিছু প্রতিরোধ সংগ্রামী পালিয়ে জিয়ার দলে ভিড়তে চায়। সেই দলে পিন্টু ও আফজাল ছিল।

ওদের হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিল। শোলার মতো পাতলা ছোট খাটো ছিল বলে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। কয়েক দিন পর ওরা জিয়াউর রহমানের বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। ওরা আপনার ভাই বজ্র’র দল নয়, ওরা আত্মসমর্পণকারী দল। ব্যাপারটা একটু চিন্তা করবেন। ২০০৯ সালে সংসদ নির্বাচনে আপনার দল বিপুল ভোটে জয়ী হলে আফজালকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক করা হয়।

’৯০-এ দেশে ফেরার পর সে বহুবার আমার কাছে এসেছে। কাগজের ঠোঙ্গা বানিয়ে কিছু এতিম শিশুকে নাকি দেখাশোনা করত, সাহায্য করত। কোথায় কোন নারী শিশু আদালতের জজ ছিল। লতিফ ভাইয়ের সুপারিশে সে নাকি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি হয়। তার পরও এসেছে। এখনো নিয়মিত যোগাযোগ করে, গুরু হিসেবে মানে। কিন্তু সমস্যাটা গুরু হিসেবে মানা না মানা নিয়ে নয়, সমস্যাটা দেশের সর্বনাশ নিয়ে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি হয়ে প্রথম যেদিন বেশ কিছু বইপত্র, টুপি, জায়নামাজ, তসবিহ উপহার নিয়ে এসেছিল, সে দিনই বড় বেশি বড় মুখ করে বলেছিল, ‘স্যার আমি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি হয়ে ৬০ লাখ আলেমকে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের লোক বানিয়ে দিয়েছি; সারা জীবন রাজনীতি করি। তারপরও কথাটা আমার কাছে অবাক লেগেছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি হয়ে ৬০ লাখ আলেমকে রাতারাতি কী করে আওয়ামী লীগ কিংবা আপনার অনুসারী বানিয়ে ছাড়ল! প্রশ্ন করতে উত্তর দিয়েছিল সারা দেশে ৩০ লাখ মসজিদের একজন ইমাম ও একজন মোয়াজ্জিন মসজিদে গণশিক্ষার ব্যবস্থা করে দুজনকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি।

বলেছিলাম ব্যাপারটা অত সহজ নয়। সেটাই এখন দেখতে পাচ্ছি। বড় দুঃখে সেদিন বলেছিলাম, আর ১০ বার অমন খুৎবা হলে হয়তো দেশ থাকবে না। আপনি কি চান আল্লাহ, রাসূলের কাছে আত্মসমর্পণ না করে কোনো মুসলমান আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করুক? তাতে কি আপনার ভালো হবে? খুৎবায় যা শুনলাম তাতে মনে হলো মুসলমানেরা সব জঙ্গি। আর অন্য সবাই ভদ্রলোক। বাংলাদেশে জঙ্গি নেই, আইএস নেই- এটা প্রমাণ করতে আপনি এবং আপনার সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

বলছেন, দেশে কোনো অশান্তি, অস্থিতি নেই। কিন্তু একদিনে প্রমাণ করে দেয়া হয়েছে দেশ এক মারাত্মক সঙ্কটে। যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কিছু হতে পারে। আপনি কি মনে করেন দেশ খুব খারাপ চলছে? খুব অসুবিধায় আছেন। ষড়যন্ত্র আছে। কিন্তু আপনি পুরোপুরি ব্যর্থ এটা মোটেও ঠিক না। কিন্তু এসব অতিপণ্ডিতদের ব্যর্থতার কালিমা কেন কপালে লেপন করতে যাচ্ছেন? মসজিদের খুৎবা নিয়ে আপনার তো অত চিন্তা করার কথা নয়।

হাদিস-কোরআন অনুসারে চিরাচরিত নিয়মেই মসজিদের খুৎবা হয়। গত বছর ৩০৮ দিন ঝড় বৃষ্টিতে অবস্থানে থেকে বায়তুল মোকাররমে ১৬ বার জুমার নামাজ আদায় করেছি। সেখানকার খুৎবা আমার তো ভালোই লেগেছে। কত জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে নামাজ পড়েছি, খুৎবা শুনেছি কখনো কোনো খুৎবা খারাপ লাগেনি।

কোথাও সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারি নেতার বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের পক্ষে কোনো আলেমকে খুৎবা দিতে দেখিনি। তাহলে কেন এমন হলো? কয়েক মাস আগে বঙ্গবন্ধুর কবরের পাশে আপনাদের মসজিদে বিরক্তিকর খুৎবা শুনেছিলাম।

আপনার বাড়ির মসজিদের ইমাম খুবই ভালো মানুষ। কিন্তু সেদিন মোয়াজ্জিন খুৎবা দিচ্ছিল। মেয়েদের সম্পর্কে, পেশাব-পায়খানা সম্পর্কে নির্বোধের মতো যে বাংলা খুৎবা দিয়েছিল ওর আগে আর কখনো শুনিনি। আল্লাহ কুরআনেও রাষ্ট্রের কথা, রাষ্ট্রের নেতার কথা বলা আছে।

সূরা নেসার ৫৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাঁবেদারি করো আল্লাহ, রাসূল ও তোমাদের শাসকদের। আর যদি তোমাদের (শাসক-শাসিতের) মধ্যে কোনো বিষয়ে মতভেদ হয়, তবে উহার মীমাংসা করো আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশ মতো, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে ঈমানদার হও। মীমাংসা হিসেবে উহাই সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে উত্তম।

এরপর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পণ্ডিতির কোনো প্রয়োজন আছে? কুরআনের মধ্যেই আল্লাহ তা’য়ালা শাসকের প্রতি আস্থাশীল থাকতে বলেছেন। তবে সে শাসক হওয়া চাই সুশাসক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, হাজার বছর ইবাদত-বন্দেগি করেও অনেকে বেহেশতের দরজা পাবে না, যা একজন সুশাসক পাবেন। আল্লাহ তায়ালা তার বেহেশত-দোজখ ভর্তি করা শুরু করবেন সুশাসক, সুআলেম, কুশাসক, কুআলেম দিয়ে। সম্ভব হলে কেন আপনি সুশাসক হবেন না?

দেশকে শান্তি দিতে পারলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে আপনি জাতির কাছে যে মর্যাদা পাবেন অন্য কারো পক্ষে তা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে আপনি কেন নিজেকে ছোট করবেন? দেশ, দেশের মানুষের আপনি সেবক। তাই দেশবাসীর মতামত নিন। জানি যারা আপনার বগলতলে আমার কথা তাদের আঘাত করে। আপনি বিব্রত হন। আমি যে হই না তা নয়। আমি নিজেও কষ্ট পাই, বিব্রত হই।

তবুও চোখের সামনে দেখেছি বলে সহ্য করতে পারি না, না বলে থাকতে পারি না। একবার চোখ বন্ধ করে চিন্তা করুন আপনার থেকে কয়েক বছরের বড় বৃদ্ধ মতিয়া চৌধুরী এখনো মুখ খিঁচিয়ে আপনার পক্ষে আমাদের বিপক্ষে যখন গালাগাল করেন, তখন কেমন দেখা যায়। আর তার যখন যৌবন ছিল, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কিভাবে বলতেন? একটু ভাবুন।

শুধু বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চাননি, আরো যে কত কি বলেছেন! আমি বাজে কথা বলতে পারি না বলে আপনাকে ওসব শুনাতে পারছি না। শুনাতে গেলেও যে পিতাকে আবার গালি দিতে হয়। এই যে লেনিন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য!

’৬৯-এ যেদিন বঙ্গবন্ধু উপাধি দেয়া হয়েছিল, ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ বঙ্গবন্ধু নামে লিফলেট করেছিল যার দু-চারটা এখনো আমার কাছে আছে। রাশিয়ার লেনিন নয়, আপনার বিক্রমপুরের লেনিন পল্টনে জনসভা ডেকে বলেছিলেন, ‘এই যে তোফায়েল আহমেদ, তোদের চঙ্গবন্ধুকে টুকরো টুকরো করলাম বলে লিফলেট ছিঁড়ে ফেলেছিলেন।

চোখে দেখা জিনিসগুলো ভুলতে পারি না। বুক ফেটে যায় তাই বলি, মাফ করবেন। আজ হাসানুল হক ইনু আপনার মন্ত্রী। তার সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই বরং আমার খুবই প্রিয় এক খালাত বোনের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। যে মেয়েকে আমরা খুব আদর যত্ন; করতাম।  জামাল, রাসেলের কথা বলছিল না। কামাল সক্রিয় রাজনীতিতে ছিল। তাকে হত্যার জন্য গণবাহিনীর ঢাকা মহানগরের কমান্ডার আর আপনার মন্ত্রী কীভাবে ছোটাছুটি করেছে তা এখনো আল্লাহর খাতায় নিশ্চয়ই লেখা আছে।

কারণ আল্লাহ সব কিছু লিখে রাখেন। নারায়ণগঞ্জের নাসিম ওসমান যদি বেঁচে থাকত তাকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অন্য দল করে তার কথায় মনে হয় এখন হবে না। আজকাল যারা কামালের বন্ধু পরিচয় দিতে চায় তারা অনেকে বন্ধু না, টোপলা টানত। জানি এরা মুখ পোছে হয়তো অস্বীকার করবেন, মানহানির মামলা করার চেষ্টা করবেন। কারণ তাদের মান আছে, আমার নেই।

বঙ্গবন্ধু আমায় বড় বেশি ভালোবাসতেন। তার অকাল মৃত্যুতে দেশের এবং আমাদের বড় বেশি ক্ষতি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমার ছায়া সঙ্গী এলেঙ্গার সামছুল হক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, কালিহাতী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম তালুকদার, কমান্ডার রিয়াজ, কলিবুর রহমান বাঙ্গালী ও কমান্ডার গোলাম মোস্তফা বীর প্রতীককে যেদিন গণবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করেছিল সেদিন সেখানে কারবালার মাতম শুরু হয়েছিল। ব্যাপারগুলো কোনো মতেই মন থেকে মুছতে পারি না। তাই বিপদ জেনেও বলি। না বলে থাকতে পারি না।

সেদিন পত্রিকায় দেখলাম আমি নাকি জাসদের বিচার চেয়েছি। আমি কখনো জাসদের রাজনীতির বিচার তো চাই-ই না বরং সমর্থন করি। আমি বিচার চাই জাসদের গণবাহিনীর অবৈধ কর্মকাণ্ডের, হত্যা, জ্বালাও পোড়াওয়ের এবং যতকাল বেঁচে থাকব ততকাল চাইব। সরকারি কর্মচারী হিসেবে বিশেষ করে পুলিশ রাজনীতি করলে বা রাজনীতির কথা বললে দেশে অশান্তি হয়। সেদিন ডিএমপি কমিশনার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফর উল্লাহকে জঙ্গি বলেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকেও না কবে জঙ্গি বলে। ওসি সালাউদ্দিনের বিচার চেয়ে ডা: জাফর উল্লাহ এমন কী অন্যায় করেছেন? ওসি সালাউদ্দিন বিরোধী দলের মিছিলে প্রকাশ্য রাস্তায় পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে আহত করে নাই? মিরপুর, পল্লবীর আশপাশে এখনো হাজার সাক্ষী পাওয়া যাবে। কত আওয়ামী লীগ নেতাই তো বলেছে, ওসি সালাউদ্দিন সে নিজেই এমপি, মন্ত্রী।  কারো কথা শোনে না। গুলি খেয়ে মরেছে বলে হিরো হয়ে গেছে?; বনানী থানার ওসি ঘটনা ঘটার সাথে সাথে গুলশানে গেল কী করে? নাকি আগে থেকেই তার সাথে যোগাযোগ ছিল? গুলশান থানার ওসি ডাকলে তবে তিনি যেতেন। ব্যাপারগুলো তলিয়ে দেখতে অসুবিধা কী। কেউ চোখে আঙুল দিয়ে কিছু ধরিয়ে দিতে চাইলেই তাকে শত্রু ভাবা ভালো না।

অতি সম্প্রতি তুরস্কের জনগণ যেভাবে রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে রক্ষা করেছে আপনার পাশে সেভাবে দেশবাসী নামুক বা থাকুক এমনটা চাই বলেই এত কথা বলি।  

‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী’ পরে, ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে’। -নয়াদিগন্ত  
২০জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে