বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:৫৩:০১

বাংলাদেশকে দখল করার কোনো ইচ্ছা নেই: মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট

বাংলাদেশকে দখল করার কোনো ইচ্ছা নেই: মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট

নিউজ ডেস্ক : সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। তিনি বলেছেন, ‘কোনোভাবেই বাংলাদেশকে দখল করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) আয়োজিত মাসিক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় লিখিত বক্তব্যে মার্শা বার্নিকাট এ কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানে বক্তা ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অ্যামচেমের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আফতাব উল ইসলামসহ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

মার্শা বার্নিকাট বলেন, অনেকে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সহায়তার আড়ালে বাংলাদেশকে দখল, নিয়ন্ত্রণ, এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করবে।

তিনি বলেন, ‘কোনো উপায়েই এ দেশকে দখল করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে পারি, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা হবে একজন অংশীদারের মতো, যাকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কৌশল ও জ্ঞান আছে।’

তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অংশীদারির ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। কোনো দেশ একা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করতে পারে না। কারণ, সন্ত্রাসবাদ কোনো একটি দেশের সীমানার মধ্য থেকে পরিচালিত হয় না।

মার্শা বার্নিকাট সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন। তবে এ কাজ এগিয়ে নিতে নিরাপত্তার পরিবেশ যে পাল্টে যাচ্ছে, তা স্বীকার করা এবং বাড়তি সক্ষমতা ও ব্যবস্থা দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশও এখন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের দৃশ্যপটে আসছে। এখানে পাওয়া প্রমাণ অন্য দেশের কাজে লাগবে।

১ জুলাই গুলশানে ও’কিচেন রেস্তোরাঁ ও হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। ঈদের দিন শোলাকিয়ায় জঙ্গিরা পুলিশের ওপর হামলা করে।

মার্শা বার্নিকাট বলেন, ‘গুলশানের ঘটনা আমাদের ব্যথিত, রাগান্বিত ও হতাশ করেছে। শোলাকিয়ার ঘটনা আমাদের ব্যথা আরও বাড়িয়েছে। ঈদের দিনটি উৎসবের হওয়ার কথা ছিল। তার বদলে তা শোকের দিনে পরিণত হয়।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটা সেই বাংলাদেশ নয়, যাকে আমি জানতে এসেছি। আমি জানি, এটা সেই বাংলাদেশ নয়, যা আপনারা গড়ছেন।’ তিনি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে গভীর ও স্বচ্ছ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে, তা মেনে নেওয়ার মানসিকতাও থাকতে হবে।

মার্শা বলেন, দেশি বিনিয়োগকারীদের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখতে সরকারের শক্তভাবে সাড়া দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘আমরা ভীত হব না। ব্যবস্থা নেব এবং আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।’

বার্নিকাট উল্লেখ করেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে নেওয়া উদ্যোগের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নিরপেক্ষ থেকেছে। তারা সংশ্লিষ্ট সবাইকে এতে অংশগ্রহণে স্বাগত জানিয়েছে।

মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানির সঙ্গে গত সোমবার পেট্রোবাংলার চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে বার্নিকাট বলেন, ‘আমার মতে, এটি আস্থার বড় উদাহরণ।’ -প্রথম আলো
২১ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে