বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬, ১১:২৯:১৪

তোপের মুখে সুরঞ্জিত

তোপের মুখে সুরঞ্জিত

ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের এক বক্তব্যের পর মন্ত্রীরা ভয় পেয়েছেন বলায় সংসদে নিজ দলের সাংসদের তোপের মুখে পড়েন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তবে মার্শা বার্নিকাটের ওই বক্তব্য ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত’ ছিল বলে বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের কথায় সমর্থন এসেছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের কাছ থেকে।

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব বাংলাদেশে আক্রমণ বা বাংলাদেশকে দখল বা কোনো উপায়ে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নয়।

বৃহস্পতিবার সংসদে মন্ত্রীদের অধিকাংশের অনুপস্থিতির বিষয়ে ডেপুটি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেন, মর্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাংলাদেশ দখল তারা করবেন না।  সাহায্য করার জন্য ‍উনি চেষ্টা করবেন।

‌‘এ কথায় মনে হলো, ইচ্ছা করলে তারা দখল করতে পারে এবং দখল বহালও রাখতে পারে।  এ ধরনের হুমকি আমেরিকানরা দিচ্ছেন! এ হুমকিতেই কি তাহলে মন্ত্রী বাহাদুররা তাদের নিরাপত্তার জন্য যে যার জায়গায় আশ্রয় গ্রহণ করছেন?’

রাষ্ট্রদূতের ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত’ ওই বক্তব্যের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনো হুমকি কোনো দেশের কূটনীতিকের দেয়া শোভনীয় নয়।  এ ব্যাপারে অন্তত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় একটি জোরদার আপত্তি জানাবেন বলে আমরা আশা করি।

এরপর মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে ফিরে সুরঞ্জিত রসিকতার ভঙ্গিতে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে ‘ভেজাইল্যা মন্ত্রী’ বলেন।

‘আপনি (ডেপুটি স্পিকার) অন্তত সামনের অধিবেশনগুলোতে যেন বলেন, সংসদ চালাতে হলে অন্তত সামনের সারির দু-এক মন্ত্রী হলেও রাখবেন। মেনন সাহেব তাকাইতেছেন, উনি তো ভেজাইল্যা মন্ত্রী।  এসব ভ্যাজাইল্যা মন্ত্রী দক্ষিণে হলে কী করবেন? অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ লাগছে।

সুরঞ্জিতের বক্তব্যের সময় বিমানমন্ত্রী মেনন ছাড়াও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সংসদ কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

মেনন ছাড়া উপস্থিত বাকি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সামনের সারিতে বসেন না। মেনন সামনের সরিতে বসলেও সেটা বিরোধী দলের পাশে।

সুরঞ্জিতের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মাননীয় মন্ত্রীরা কেবল ঢাকায় নয়, শুক্রবার-শনিবার এলাকায় গিয়ে অফিস করেন, তাই সংসদে নেই।  মাননীয় সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একটা শব্দ বলেছেন, সেটা এক্সপাঞ্জ করা হোক- ‘মনে হয় যেন মন্ত্রীরা পালিয়ে গেছে’।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য গণমাধ্যমে ‘সঠিকভাবে’ আসেনি বলেও দাবি করেন নানক।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী এ সময় বলেন, আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব।  যদি কোনো আনপার্লামেন্টারিয়ান শব্দ থাকে এক্সপাঞ্জ করব।

নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান মাইক ছাড়াই কথা বলতে শুরু করলে তাকে ফ্লোর দেন ডেপুটি স্পিকার।

শামীম ওসমান বলেন, আমাদের অত্যন্ত সিনিয়র নেতা আমার পিতৃতুল্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, মন্ত্রীরা ভীত।  আমাদের প্রধানমন্ত্রী যাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন তারা গুরুত্বপূর্ণ নেতা, তারা মোটেও ভীত নন।  একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলার সময়েও তারা ভীত হননি।

তিনি বলেন, এই নেতাদের এখানে অসম্মানিত করা হয়েছে।  এ ধরনের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।  এ ধরনের মন্তব্যে আমি ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাই।
২১ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে