শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১২:৩৭:৩৬

জঙ্গি সম্পৃক্ততা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা বললেন

জঙ্গি সম্পৃক্ততা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা বললেন

নিউজ ডেস্ক: সাম্প্রতিক গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও শোলাকিয়া ময়দানে জঙ্গি হামলার পর ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা নিয়ে চিন্তিত সবাই। মনোবিজ্ঞানীরা একে উচ্চভিলাষী জীবন, পারিবারিক বন্ধনের শিথিলতা জঙ্গিবাদের দিকে ঝোঁকার অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছে।

মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে আমরা যে সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে প্রবেশ করেছি, যৌথ পরিবার ভেঙে গড়ে তুলেছি একক পরিবার। অতীতে আমরা দাদা-দাদী, চাচা-চাচীর সঙ্গে একই পরিবারে বেড়ে উঠতাম। সে সময় একা থাকার কোনো সুযোগ ছিল না। ছেলে-মেয়েরা তখন একটি পারিবারিক আবহের মধ্যে বেড়ে উঠতো। তাদের মধ্যে মমত্ববোধের জায়গাটি ছোট থেকেই তৈরি হয়ে যেত।

কিন্তু বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা সেই পরিমণ্ডল ছেড়ে বড় হচ্ছে একা একা। তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধের জায়গাটি এখন অনেক কম। কর্মব্যস্ততার কারণে পিতা-মাতারাও এখন সন্তানদের সময় দিতে পারছে না। এজন্য তাদের মাঝে কারও প্রতি মমত্ববোধ গড়ে ওঠে না। তাদের চিন্তা ভাবনা হয়ে গেছে অধিক-মাত্রায় আত্মকেন্দ্রিক।

এই আত্মকেন্দ্রিকতা জঙ্গিবাদের দিকে ঝোঁকার অন্যতম কারণ। আত্মকেন্দ্রিক ছেলে-মেয়েদের পরিবারের  প্রতি কোনো পিছুটান না থাকায় তাদের জীবনের মূল্য সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক মনোভাব থাকে না। সে কারণে তারা যে কোনো সময় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।


সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ মূলত একটি বিচ্যুত আচরণ। এটি এখনও মূলধারায় প্রবেশ করেনি। বর্তমানের পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থাকে জঙ্গিবাদের ক্ষেত্রে  অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, অধিক অর্থ লাভের আকাঙ্ক্ষা। চাকচিক্যময় জীবনের প্রতি অধিক মনোযোগই চালিত করছে জঙ্গিবাদের পথে। সেক্ষেত্রে অবহেলিত হচ্ছে আমাদের মানসিক গঠন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক  নুরুল আমিন বেপারী বলেন, কোনো দেশে যখন গণতান্ত্রিক পরিবেশের ঘাটতি দেখা দেয়, মানুষ অধিকার বঞ্চিত হয় তখনই সেদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। এছাড়া বর্তমানে পিতা-মাতাদের অর্থের প্রতি অধিক লোভও সন্তানদের জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।


এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পারিবারিক বন্ধনের দৃঢ়করণ ও পরিবারের পরিপূরক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাসহ সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার দিকে ছেলে-মেয়েদের অধিক মনোযোগী করে তুলতে হবে তাহলেই সমাজ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব। সেক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদৃঢ়করণের সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সচেষ্ট হবার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।-এমজমিন

২৩ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে