শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬, ০৩:০৮:৩৮

‘বিএনপি পারলে আ.লীগও পারে’

‘বিএনপি পারলে আ.লীগও পারে’

নিউজ ডেস্ক: তারেক রহমানের অর্থ পাচার মামলার রায়ে বিএনপি যদি প্রভাবিত করতে পারে, তবে আওয়ামী লীগ আরও বেশি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন।

গতকাল শুক্রবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের সাজার বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। বিচারককে প্রভাবিত করে তারেক রহমান খালাস পান বলে আইনমন্ত্রীর আনিসুল হকের বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ কথা আমিও বলি, যেহেতু তাঁরা যখন বলছেন যে বিচারিক আদালতকে প্রভাবিত করেছেন। বিএনপির পক্ষে যদি আদালতকে প্রভাবিত করা যায়, তাহলে সরকার কতটা প্রভাবিত করতে পারে এবং কোনো পর্যন্ত যেতে পারে, তা আপনারাই বিবেচনা করেন।’


গত বৃহস্পতিবার অর্থ পাচার মামলার আপিলে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। রায়ের পর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছিলেন, বিচারিক আদালতের বিচারককে প্রভাবিত করে তারেক রহমান খালাস পেয়েছিলেন।


এদিকে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম অভিযোগ করে বলেন, বিচারিক আদালতের বিচারক মো. মোতাহার হোসেনকে তারেক রহমান তিন কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন।


এ রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি আপিল করবে কি না, জানতে চাইলে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে মামলাটি করা হয়েছে এবং তাঁর অনুপস্থিতিতেই সাজা দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আইনের বিধানমতে যে পর্যন্ত না তারেক রহমান দেশে আসেন এবং এখানে হাজির না হন, সে পর্যন্ত তাঁর পক্ষে আপিল করা সম্ভব নয়।’

ফৌজদারি মামলায় সময়ের কোনো লিমিটেশন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০-৩০ বছর পরও যেকোনো সময় ফৌজদারি মামলা করা যায়। আমরা বিশ্বাস করি, এ মামলায় একদিন সুবিচার হবে এবং দেশের মানুষ জানতে পারবে, তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য সাজা দিয়েছিল। আমরা আপিল করব এবং দেখাব এ মামলাটি সম্পূর্ণ বেআইনি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব আরও বলেন, ‘অর্থ পাচারের এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুটি জিনিস প্রমাণ করতে হবে। এক. অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করেছেন। দুই. বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে।

কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাই বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা বিদেশে যায়নি। মামলায় চায়না হারবিন পাওয়ারের বাংলাদেশি এজেন্ট নির্মাণ²ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান খাদেজা ইসলাম তাঁর সাক্ষ্যে বলেছেন, তিনি বৈধভাবেই গিয়াসউদ্দিন মামুনকে কনসালট্যান্সি ফি দিয়েছেন। অথচ খাদেজার কথিত বক্তব্যের ওপর নির্ভর করেই দুদক এ মামলাটি করেছিল।’

মামলার বিবরণের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, টঙ্গীতে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারি দরপত্রে তিনটি বিদেশি কোম্পানি অংশ নেয়। এতে সর্বনিম্ন দর দেয় চায়না হারবিন পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং। এ প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশি এজেন্ট নির্মাণ ইন্টারন্যাশনাল এবং এর চেয়ারম্যান খাদেজা ইসলাম।

এ প্রতিষ্ঠানের কনসালট্যান্ট ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। মামলায় অভিযোগ ছিল,খাদেজা ইসলাম গিয়াসউদ্দিন মামুনকে ঘুষ দিয়েছেন। আর মামুন তারেক রহমানের সহযোগিতায় কাজটি পাওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং তারেক রহমান মামুনের ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, তারেক রহমান সাপ্লিমেন্টারি ক্রেডিট কার্ডে মাত্র ১৯ লাখ টাকা খরচ করেছিলেন। সে টাকা তাঁর (তারেক) ট্যাক্স ফাইলে দেখানো আছে এবং ওই টাকা দেশে ফিরে পরিশোধও করেন। কিন্তু সিঙ্গাপুরের ব্যাংক থেকে যারা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে, যারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছে, এ মামলায় সেখানকার কাউকেই সাক্ষী হিসেবে আনেনি সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, রুহুল কবির রিজভী, মো. শাহজাহানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।-প্রথম আলো

২৩ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে