শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৬, ১০:৩৭:০১

সর্বক্ষেত্রে এমন নজির দেখতে চায় দেশবাসী

সর্বক্ষেত্রে এমন নজির দেখতে চায় দেশবাসী

পাবনা : ঘুষ-দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে দেশ।  ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না।  বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়েই কাজ সেরে নিতে হয়।  কিন্তু পাবনার ঈশ্বরদী পৌর তহশিলের ঘটনায় মানুষ যেন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে।  সত্যিই যদি সর্বক্ষেত্রে এমন নজির দেখা যেত তাহলে হাফ ছেড়ে বাঁচতো দেশের মানুষ।

পাবনার ঈশ্বরদী পৌর তহশিলে এক ব্যক্তি জমি খারিজের দেয়া ঘুষের টাকা ফেরত পাওয়ায় নজির স্থাপন হলো।  ওই ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে ঘুষের দুই হাজার টাকা ফেরত দেয়ার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাক আহমেদ।  এমটিনিউজের পক্ষ থেকে তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে ঈশ্বরদী উপজেলায়।
পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাক আহমেদের নির্দেশে ঈশ্বরদী পৌর তহশিল কার্যালয় থেকে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বাবুলচারা গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দেয়া হয়।

উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার 'জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রদান এবং সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ' বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।  পাবনা জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত মানুষের কাছে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাক আহমেদ ঈশ্বরদীর ভূমি ও তহশিল অফিসের ঘুষ-দুর্নীতি ও হয়রানি সম্পর্কে কোনো অভিযোগ থাকলে সরাসরি জানাতে অনুরোধ করেন।

এ সময় ঈশ্বরদী ইক্ষু গবেষণা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান পৌর তহশিলে ঘুষ, দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) বলেন, সম্প্রতি তার এক আত্মীয় জমি খারিজের জন্য পৌর তহশিলে গেলে সেখানকার কয়েক কর্মচারী ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।

তার আত্মীয় নগদ দুই হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হন।  বাকি আট হাজার টাকা জমি খারিজের পর দেয়া হবে বলে জানালে ওই কর্মচারীরা কাজটি করতে সম্মত হন।

এ অভিযোগ শুনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাক আহমেদ ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ নেওয়াজকে মঞ্চে ডেকে নেন।

তাকে একদিনের মধ্যে পৌর তহশিল থেকে ঘুষের ওই টাকা ফেরত দিতে এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

তার নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌর তহশিলের অস্থায়ী এক কর্মচারী সোহেল হোসেনের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘুষের দুই হাজার টাকা ফেরত দেন।

আজিজুর রহমান বলেন, তার আত্মীয় ঘুষের দুই হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন।  কিন্তু এখনো জমির খারিজ হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ঘটনার সঙ্গে দালাল প্রকৃতির কেউ জড়িত থাকতে পারে।  বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌরতে কোনো তহশিলদার নেই।  বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
২৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে