শাহ্ দিদার আলম নবেল ও নাজমুল কবীর পাভেল : দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে শিলংয়ের ভাড়া বাসায় ঈদুল আজহা উদ্যাপন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং ফোনে পরিবারের সদস্য ও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা আদান-প্রদানে ঈদের দিন অনেকটা ব্যস্ত সময়ই পার করেছেন তিনি। তবে স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার-পরিজন দেশে থাকায় ঈদের দিন মন ভালো ছিল না সালাহউদ্দিনের। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করে গতকাল শিলং থেকে দেশে ফেরা কক্সবাজারের এক সাংবাদিক এমন তথ্য জানিয়েছেন।
ওই সাংবাদিক জানান, ঈদুল আজহার দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে সাদা নতুন পাঞ্জাবি ও পাজামা পরেন সালাহউদ্দিন। এরপর হাতে জায়নামাজ নিয়ে তার বাসায় অপেক্ষমাণ কয়েকজন স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীকে নিয়ে শিলংয়ের লাবাং মদিনা জামে মসজিদের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। ওই মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে বাসায় ফেরেন। বাসায় ফিরে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও নাশতা সারেন। পরে ফোনে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দেশে বিএনপির শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন সালাহউদ্দিন। দেশ থেকেও অনেকে তার কাছে ফোন করেন।
সালাহউদ্দিনের স্বজন কলকাতার বাসিন্দা আইয়ুব আলী প্রতিবেদককে জানান, ঈদে দেশ থেকে সালাহউদ্দিনের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে শিলংয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা আসতে পারেননি। ঈদের দিন তার ভাতিজা সাফওয়ানুল করিমসহ কয়েকজন আত্দীয় ও দলীয় নেতা-কর্মীর সঙ্গে সময় কাটান সালাহউদ্দিন।
আইয়ুব আলী জানান, শিলংয়ে কোরবানি দেননি সালাহউদ্দিন। তবে তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারে কোরবানি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে ঈদের আগের দিন বেলা ৩টা ৫১ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন সালাহউদ্দিন। ওই শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি লেখেন, 'সম্মানিত সকল শুভাকাঙ্ক্ষী, ফলোয়ার, বন্ধু-বান্ধব, আত্দীয়-স্বজন, যারা দেশে অথবা বিদেশে অবস্থান করছেন, আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে, পেকুয়া-চকরিয়া-কক্সবাজার এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি ঈদ মুবারক।'
প্রসঙ্গত, ১০ মার্চ ঢাকা থেকে 'নিখোঁজ' হন সালাহউদ্দিন। নিখোঁজের প্রায় দুই মাস পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের গলফ লিংক রোড থেকে তাকে আটক করে সেখানকার পুলিশ। প্রথমে মানসিক রোগী ভেবে পুলিশ তাকে শিলংয়ের মিমহ্যান্স মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। তার পরিচয় জানার পর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০ মে তাকে শিলংয়ের নেগ্রিমস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৬ মে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে ২৭ মে আদালতে তোলা হয়। শিলং আদালতের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালাহউদ্দিনকে ১৪ দিন বিচারিক হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ওই রাতেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন তাকে আবারও নেগ্রিমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩ জুন আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ৫ জুন শিলংয়ের নিম্ন আদালতের বিচারক ভি মৌরি শর্ত সাপেক্ষে সালাহউদ্দিনের জামিন মঞ্জুর করেন। ৮ জুন সালাহউদ্দিন হাসপাতাল থেকে ভাড়া বাসায় ওঠেন। ১০ জুন মামলার ধার্য তারিখে আদালত সালাহউদ্দিনের জামিন বহাল রাখেন। জুলাই মাসে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।-বিডিপ্রতিদিন
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে